৭ বছর পর আগামীকাল ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উত্তরা পূর্ব, পশ্চিম, বিমানবন্দর থানা এবং ১ ও ৫১ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে সরব হয়ে উঠেছে দীর্ঘ সময় সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে থাকা নিরব নেতা-কর্মীরা। সম্মেলনের স্থান উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠের আশপাশ পোস্টারে পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে।
পাঁচটি সাংগঠনিক কমিটির শীর্ষ দশ পদের লড়াইয়ে বর্তমান কমিটির নেতারা সহ নতুন অনেক হেভিওয়েট পদ প্রত্যাশীরা জোরেশোরে মাঠে নেমেছেন। রাজনীতিক ক্যারিয়ার বলতে কিচ্ছু না থাকা অনেকের প্রার্থীতা ঘোষণায় এলাকাটিতে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। যাদের প্রার্থীতা ঘোষনা মূলতঃ নেতাকর্মীদে হাসির খোরাক যোগাচ্ছে।
সম্মেলনের মাধ্যমে স্থবির হয়ে যাওয়া দলে গতিশীলতা আসবে,সাংগঠনিক কার্যক্রম শক্তিশালী হবে এবং যোগ্য-ত্যাগী ও বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত কর্মীদের মূল্যায়ন হবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
থানা ও ওয়ার্ড গুলোতে বিভিন্ন পদে আসতে চাওয়া নেতা কর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে । তিনটি থানা ও দুটি ওয়ার্ডের নতুন কমিটি ঘিরে নেতাদের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কমিটি গুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে চান এমন অনেকের নাম শোনা গেলেও উত্তরা পশ্চিম থানায় সভাপতি পদে ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফসার উদ্দিন খাঁন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ছাত্রলীগ, যুবলীগ করে দীর্ঘদিন মাঠে থেকে কর্মীবান্ধব নেতার তকমা পাওয়া যুবলীগ মহানগর উত্তরের বর্তমান কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম খাঁনকেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসাবেই সবাই ভাবছে। এখানে সভাপতি প্রার্থীর তালিকায় সাংসদ হাবিব হাসানের ছোট ভাই আলাউদ্দিন আল সোহেলের নাম আসায় কর্মী সাধারণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশই বলাবলি করছে সোহেলের প্রার্থীতা আগামী নির্বাচনে বড় ভাইয়ের মনোনয়নে কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে। অবশ্য সরেজমিন খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে শক্তিশালী প্রার্থী হিসাবে সেও আলোচনায় রয়েছে।
পূর্ব থানার সভাপতি পদে কর্মী সাধারণের গ্রহণযোগ্যদের তালিকায় রাজনীতির মাঠে দীর্ঘদিন ধরে পথচলা সৈনিক আনিসুর রহমান শাহনেওয়াজ ও সামসুদ্দিন লাভলুর নাম আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। সাধারণ সম্পাদক পদে মিশুক ও বিনয়ী হিসাবে খ্যাতি পাওয়া জাবেদ সিদ্দিকীকেই তাদের আস্থায় জায়গায় নিতে চাচ্ছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারপরের আলোচনায় রয়েছে খাঁন মাহবুুবের নাম। অবশ্য মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ধরেই নিয়েছে স্থানীয় এমপি’র আস্থাভাজন হিসাবে জাবেদ সিদ্দিকীর হাতেই সাধারণ সম্পাদকের পদটি যাচ্ছে।
উত্তরা পূর্ব, পশ্চিম ও বিমানবন্দর থানা আওয়ামী লীগের আলাদা কোন অফিস না থাকলেও এই তিন থানার সমন্বয়ে গঠিত ১নং ওয়ার্ডেই কেবলমাত্র একটি অফিস আছে। যেটি ওয়ার্ড সভাপতি হিসাবে সালাউদ্দিন আহমেদ খোকার নেতৃত্ব পরিচালিত হয়ে আসছে। তিন থানার সাংগঠনিক কার্যক্রম কেবল এই অফিসটি থেকেই পরিচালিত হয়ে আসছিল। এলাকায় রাজনীতির জ্যান্টলম্যান খ্যাত সালাউদ্দিন আহমেদ খোকাকেই উপর মহল থেকে শুরু থেকে তৃনমূল কর্মীরাও বিমানবন্দর থানার সভাপতি হিসাবে ভাবছে বলে শোনা যাচ্ছে। বর্তমান কমিটির সভাপতি শাহজাহান মন্ডলও পদ প্রত্যাশী রয়েছে।
খোকার চলে যাওয়ায় ১নং ওয়ার্ডে সভাপতি প্রার্থীর তালিকায় ভারপ্রাপ্ত ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন লাভলুর নামটাই আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। এখানে সভাপতি প্রার্থী হিসাবে এমপি’র ভাগ্নে নুরুল হক নুরুর নামটাও আলোচনায় রয়েছে। অবশ্য শেষপর্যন্ত সমঝোতার মাধ্যম হেভিওয়েট এই দুই প্রার্থীর মাঝেই সভাপতি, সাধারণ পদ দুটি বণ্টন করা হবে বলেই অভিজ্ঞ মহল মনে করছে।
দীর্ঘ সাত বছর চোঁখে পড়ার মতো দৃশ্যমান কোন দলীয় কার্যক্রম না থাকায় তিনটি সাংগঠনিক থানার শীর্ষ ছয়টি পদের তিনটি সভাপতির পদে নতুন নেতৃত্ব এনে তিনজনকেই শান্তনা পুরষ্কার হিসাবে নগর কমিটির গুরুত্বহীন জায়গায় নিয়ে যাবার প্রস্তুতি রয়েছে জোর আলোচনা রয়েছে। সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা ও নৈতিক স্খালনের অভিযোগে সাধারণ সম্পাদকদের কেউ কেউ পদবঞ্চিত হয়ে রাজনীতি ছিটকে পড়তে পারেন এমন গুঞ্জনও রয়েছে।