বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত একটি নাম তানোর উপজেলা। এ উপজেলায় একসময় ইটের তৈরি পাকা বাড়ি খুব কম ছিলো। মাটির বাড়ি ছিলো বেশি। বড় বড় গারস্থদের প্রায় বাড়ি ছিলো মাটির দুতলা। আর সেই মাটির দুতলা বাড়ির চারিদিকে উঁচু করে সারি সারি মাটির হাঁড়ি টাঙ্গিয়ে পোষা হত শখের পায়রা কবুতর। কবুতর এমন একপ্রাণী তাকে গরীব বড়লোক সকলশ্রেণী পেশার মানুষ পুষতে চায়। এমনকি কেউ কেউ নিজের শোয়ার ঘরের ভিতর ও বাড়ির বারান্দা জুড়ে মাটির হাঁড়ি বা বাঁশ কাঠের তৈরি টং টাঙ্গিয়ে পোষেন কবুতর। কথায় আছে নাকি কবুতর শখের পায়রা যে বাড়িতে সুখ থাকে সেই বাড়িতে কবুতর ভরে উঠে। কিন্তু কালের পরিবর্তনে এখন আর তেমন মাটির দুতলা বাড়ি দেখা যায়না। চোখে পড়ে না সারি সারি সাজানো মাটির হাঁড়িতে থাকা শখের পায়রা কবুতরের ঝাঁক। যেটুকু দেখা মিলে সেগুলো তাও আবার প্রত্যান্ত গ্রামীণ এলাকার পাড়া গ্রামে। এখনো এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গেলে দেখা যায় আকাশ জুড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ডানা মেলে উড়ছে বিভিন্ন রকমের কবুতর। কখনো ধানের জমিতে দলবেঁধে পড়ছে আবার কখনো উড়ে দলবেঁধে দুতলা বাড়ির টিনের উপরে বসছে। এতে করে বিভিন্ন কালারের কবুতর আকাশে উড়তে দেখে মনটা ভোরে যায় কবুতর প্রেমীদের। এমনও কবুতর প্রেমী আছে যারা সারাদিন নাওয়া খাওয়া বিশ্রাম বাদ দিয়ে কবুতর পোষা নিয়ে পাগল হয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে যুগের পরিবর্তনে এমন ভাবে আর আকাশে উড়তে দেখা যায় না দলবেঁধে কবুতর। উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির যশপুর গ্রামের কবুতর প্রেমী সুজন আলী জানান, ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে পাকা বাড়ি নির্মাণের জন্য ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে পুরাতন মাটির তৈরি দুতলা বাড়ি। ফলে চিরতরে বিলীন হয়ে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি বাড়ি ও মাটির হাঁড়িতে লাগানো শখের পায়রা কবুতর। তবে এখনো কিছু মাটির দুতলা বাড়ি আছে সেই বাড়িতে দেখা মিলছে মাটির হাঁড়িতে লাগানো শতশত কবুতর। তানোর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বেলাল উদ্দিন বলেন, কবুতর পোষা একটি লাভজনক পেশা। কবুতর পোষতে তেমন কোন খরচ হয়না,বর্তমান বাজারে একেক জোড়া কবুতরের বাচ্চার দাম ২শ টাকা থেকে ৩শ টাকা। বড় কবুতরের দাম একেক জোড়া ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা বা তারও উপরেও দাম। কবুতর পালন করেও এখন অনেকে সাবলম্ভী হচ্ছে।