পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার লীলার মেলা দাখিল মাদরাসার সহকারি মৌলভী শিক্ষক মো. জামাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে একাধীকবার যৌন হয়রানীর অভিযোগ হলেও সাময়িক বহিস্কার পর্যন্ত শাস্তি সীমাবদ্ধ থাকে।
ছাত্রীদের বারবার যৌন হয়রানী করলেও সাময়িক বহিস্কার পর্যন্ত শাস্তি সীমাবদ্ধ থাকায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মাদরাসা সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে ছয় মাসের জন্য এবং ১১ এপ্রিল ২০১৭ সালে ছয় মাসের জন্য সাময়িক বহিস্কার করা হয়। সর্বশেষ গত ২১ মে ৬ষ্ঠ শ্রেণির তিনজন ও ৭ম শ্রেণির দুই জন ছাত্রী যৌন হয়রানীর অভিযোগে মাদরাসার সুপারিন্টেনডেন্ট বরাবর অভিযোগ করে।
যৌন হয়রানির শিকার ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, শিক্ষক জামাল উদ্দীন তাকে বিভিন্ন ধরনের যৌন নির্যাতন করে আসছে। একাধিকবার তার লালসার শিকার হতে হয়েছে। লোকলজ্জার ভয়ে সে প্রথমে বিষয়টি গোপন রাখে। পরে তার মাকে এবং মাদরাসার এক শিক্ষিকাকে বিষয়টি জানায়।
যৌন হয়রানির শিকার ৭ম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, ক্লাস নেওয়ার ফাঁকে স্যার বিভিন্ন সময়ে অশালীন ভঙ্গি, কথাবার্তা ও কুরুচিপূর্ণ আচরণ করে আসছেন। পরে আমরা স্যারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।
ওই ছাত্রীদের অভিভাবকরা জানায়, আমরা সন্তানদের শিক্ষকের কাছে বিশ্বস্ততার সঙ্গে রেখে যাই, কিন্তু সেই শিক্ষক যদি লম্পট হয় তাহলে কিভাবে আমাদের সন্তানরা নিরাপত্তা পাবে। অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী বরখাস্তসহ আইনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানায়।
আবু তৌহিদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনেক ছাত্রীর অভিযোগ আছে, কিন্তু কেউ মুখ খোলে না। এখন সময় এসেছে প্রতিবাদ করার।
অভিযুক্ত শিক্ষক জামাল উদ্দীন বলেন, আমার উপর ছাত্রীরা যে অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
লীলার মেলা দাখিল মাদরাসার সুপারিন্টেনডেন্ট আমানউল্লাহ বলেন, ৬ষ্ঠ শ্রেণির তিনজন ও ৭ম শ্রেণির দুই জন ছাত্রীকে যৌন হয়রানী করার অভিযোগ পেয়েছি। ওই শিক্ষকে এবিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন জবাব পাইনাই।
আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুসফিকুল আলম হালিম বলেন, আমার কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে বিষয়টি তদন্ত করে আইনআনুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।