দু’দিন বিরতির পর সোমবার সন্ধ্যা থেকে আবারো ভারি বর্ষণ ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ফের বন্যা দুর্ভোগে লাখো মানুষ। হু-হু করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিনিদ্র রাতদিন আতঙ্কে কাটছে সুরমা, লক্ষীপুর, বগুলা, বাংলাবাজার, নরসিংপুর ও দোয়ারা সদর ইউনিয়নের ভূক্তভোগী লাখো মানুষের।
প্রথম দফা বন্যার পানি এখনো সরেনি নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘরের আঙিনা ও রাস্তাঘাট থেকে। তবুও থামেনি প্রাকৃতিক দূর্যোগের আগ্রাসনি থাবা। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে উপচে পড়া পানিতে আবারো নদীনালা, খালবিল, হাওর-বাওর, মাঠঘাট ও জল-স্থল একাকার হয়ে পড়ছে। গবাদি পশুপক্ষি নিয়ে আবারো বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খামারি মালিকরা।
নিম্নাঞ্চলের অনেক টিউবওয়েল পানিতে ডুবে যাওয়াসহ স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় পেটের পীড়া, চর্মরোগ ও পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের উপসর্গ এখনো পুরোদমে নির্মুল হয়নি।
বিভিন্ন কাঁচা-পাকা সড়ক আবারও নানা স্থানে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে সুরমা, বগুলা ও লক্ষীপুর ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নপ্রায়।
এদিকে প্রথম দফা বন্যায় উঠতি আউশ ফসল, আমনের বীজতলা, সবজি খেত ও অধিকাংশ মাছের পুকুর তলিয়ে গিয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হন হাজারো পরিবার। তবুও ক্ষান্ত হয়নি ভূক্তভোগী কৃষি ও মৎস্যজীবী পরিবারগুলো।
ক্ষতি পুসিয়ে নিতে বুকভরা আশা নিয়ে পুকুরে আবারও ছাড়েন মাছের পোনা, বীজ বুনেন বীজতলায়। কিন্তু বিধি বাম। প্রথম দফা বন্যার রেশ না কাটতেই ফের বন্যার অশনি সংকেতে আবারও চোখে সর্ষেফুল দেখছেন তারা।
এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। দোয়ারাবাজারে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১১ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় চেলা, মরা চেলা, চলতি, খাসিয়ামারা, চিলাই, কালিউড়ি ও ছাগলচোরা নদীসহ বিভিন্ন হাওর, খাল-বিলের পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলসহ উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা ও বাড়িঘরের আঙিনায় পানি থৈ থৈ করছে।
নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াংকা বলেন, সুরমাসহ উপজেলার বিভিন্ন নদীনালা, হাওড় ও খালবিলের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ফের বন্যার আশংকা বিদ্যমান। তবে এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ ছাড়াও বন্যা মোকাবেলায় আমাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিংসহ কন্ট্রোলরুম খোলা আছে। উপজেলা প্রশাসনসহ আমাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এ বিষয়ে তৎপর রয়েছেন।