বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচতলা নতুন ভবন নির্মাণ কাজে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ৩ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার ৭শ’ ৬৮ টাকা ব্যয়ে এ ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে।
বাগেরহাট জেলা নির্বাহী প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধানে মেসার্স নাহিদ এন্ড মিজান এন্টারপ্রাইজ এ কাজের দায়িত্ব পান। অভিযোগ রয়েছে শুরু থেকেই ঠিকাদারি এ প্রতিষ্ঠান নিম্ন মানের ইট, বালু ও পুরানো রড দিয়ে কাজ শুরু করলেও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলি বাঁধা দেননি।
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মানসম্মত কাজ করতে সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা বরাদ্দ ও তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নিয়োগ দিলেও এ প্রকল্পের ক্ষেত্রে সরকারী নিয়ম নীতির প্রতি তোয়াক্কা করা হয়নি। পিলার ও প্লাষ্টার করার পর ওয়াটার কিউরও দেয়া হয়নি। ফলে পিলারে দেখা দিয়েছে বড় ধরণের ফাটল। ভবনের তিন পাশে মোরেলগঞ্জ বাজারের ব্যস্ততম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা থাকা সত্ত্বেও কোনরূপ প্রটেক্টর ছাড়াই নির্মাণ কাজ চলছে। ইতোমধ্যে কয়েকবার রাস্তার ওপর ভারী প্লেটশিট পরে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিল পথচারীসহ প্যারাডাইস পুস্তকালয়ের স্বত্বাধিকারী বাচ্চু। প্রায়ই রাস্তার ওপর ইট, বালু সিমেন্ট পড়তে থাকে।
সর্বশেষ শনিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে নির্মাণাধীন পাঁচতলা ভবনের ছাদে ব্যবহৃত একগুচ্ছ বাঁশ রাস্তার পাশে ‘মধুর ক্যান্টিন’ দোকানের টিনের চালের ওপর পড়ে টিনের চালের ও দোকানের বেশ কিছু মালামাল নষ্ট হয়ে বেশ ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে দোকানের মালিক মিজান জানান। অল্পের জন্য রক্ষা পান কয়েকজন পথচারীসহ তিনিও।
কর্তৃপক্ষের এহেন দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকান্ডের ব্যাপারে মুহূর্তেই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এলাকাবাসী। বন্ধকরে দেওয়া হয় কাজ। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন। এলাকাবাসীর দাবি উপযুক্ত প্রটেক্টর ও ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত কোন কাজ করতে দেয়া হবে না। তবে কার্যাদেশের পর কাজের মেয়াদ অতিক্রান্ত হলেও ঠিকাদারি এ প্রতিষ্ঠান কাজ এখনো শেষ করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাহিদ এন্ড মিজান এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ আজিজুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে স্থানীয় ম্যানেজার আবু আলম জানান, অল্প ক’দিন হল এসেছি, গতকালের কালবৈশাখী ঝড়ে হয়তো আলগা হয়ে ছিল কাজের সময়ে অসাবধানতার দরুন বাঁশ নীচে পড়ে গেছে। তবে প্রটেক্টরের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেননা বলে জানান।
তদারকির দায়িত্বে থাকা বাগেরহাট জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাফিস বলেন, বিষয়টি তাকে কেউ অবহিত করেননি, তবে তদনাতপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি ওই সময় বাগেরহাটে এক সভায় রয়েছেন ফিরে এসে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।