এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রংপুরের কাউনিয়াতে পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজ ঘরে তোলা, কাটা ও সংরক্ষণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষক-কৃষাণিরা।
তবে ফলনে খুশি হলেও দামে বেজার তাঁরা। গতকাল সোমবার উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ও হাট ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে বীজ, কীটনাশক, পরিচর্যা, শ্রমিক ও পরিবহন বাবদ খরচ হয়েছে ১৮ থেকে ২২ টাকা। উপজেলার তকিপল পেঁয়াজের পাইকারী হাটে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজের আকার আকৃতি মানভেদে প্রতিকেজি ৮ থেকে ১১ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ ৩০০ থেকে ৫৬০ টাকা মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। হাটে আসা কৃষকেরা জানায়, এবার পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। তিস্তায় হঠাৎ পানি বাড়াতে অনেক কৃষকেরা পেঁয়াজ তুলতে পারে নাই তাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা গেলে কৃষকেরা লাভবান হবেন। টেপামধুপুর ইউনিয়নের ভায়ারহাটের কৃষক শেখ ফরিদ বলেন, ১৮ মণ পেঁয়াজ হাটে এনেছি। প্রতিমণ ৪শ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা দাম বলছে যা উৎপাদন ব্যয় থেকে ১৫ টাকা কম।’ বিশ্বনাথ গ্রামের কৃষক জব্বার, ছামসুল, সৈয়দ আলী বলেন, ‘দেশে বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি করায় আমরা ক্ষতিগ্র হচ্ছি। প্রতিকেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে প্রায় ১৮-২২ টাকা খরচ হয়েছে। সেই পেঁয়াজ ৪০০-৫৫০ টাকা মণ বিক্রি করেছি। দাম এমন থাকলে কৃষকেরা পেঁয়াজ চাষ বন্ধ করে দেবে’ সামনের বছর আর পেঁয়াজের চাষ করব না। একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আকার আকৃতি ও মান ভেদে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা মণ পেঁয়াজ কেনাবেচা হচ্ছে। এবার পেঁয়াজের উৎপাদন বেশি ও বাইরের পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় দাম কম। বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার ক্রেতা-বিক্রেতা হাটে এসেছে। তবে দাম কম থাকায় কৃষকেরা লোকসান গুনছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পেঁয়াজের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮০ হেক্টর এবং অর্জিত হয়েছে ১৯০হেক্টর যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোছ্াঃ শাহানাজ পারভীন সাথী বলেন, কৃষকেরা এখন পেঁয়াজ ঘরে তোলা, কাঁটা ও সংরক্ষণের ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। পেঁয়াজের দামে কৃষকেরা অখুশি। কাউনিয়া উপজেলাতে পেঁয়াজ এর চাহিদা ৩৫০০ মেট্রিক টন আর উৎপাদন এখনো নির্ধারন করা হয়নি।