বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বিশ বছর আগে নির্মিত একটি সেতুর রেলিং ভেঙ্গে যাওয়ায় বেহাল দশার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে কয়েকটি গ্রামের শতশত কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ ওই সেতুতে চলাচলকারী এলাকাবাসীরা। জরাজীর্ণ সেতুটির বিশ বছর পেরিয়ে গেলেও সংস্কারের উদ্যোগে নেয়া হয়নি কখনও। প্রতিদিন শতশত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই জরাজীর্ণ সেতুটি দিয়ে পার হচ্ছেন।
সেতু দিয়ে লোকজন চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুঘর্টনার স্বীকার হচ্ছে। উপজেলা এলজিইডি অফিস এই সেতু সংস্কারের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শরীফাবাদ গ্রামের হযরত শেখ আরিফ শরীফ (রহঃ) নুরানী মাদ্রাসা সংলগ্ন খালের উপর বিশ বছর পূর্বে এই সেতুটি নির্মান করা হয়। সেতুটি নির্মানের ৫/৬ বছর পর থেকেই সেতুর উপরের বিভিন্ন স্থানের রেলিং ভেঙ্গে রড বের হয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ওই গর্তের কারনে এবং সেতুর রেলিং ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে ওই সেতু দিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। মাঝে মধ্যে সেতু দিয়ে মরটসাইকেল, ভ্যান চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুঘর্টনার স্বীকার হচ্ছে যাত্রী ও পথচারীরা। ওই সেতু দিয়ে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন শতশত লোকজন চলাচল করছে। প্রতিদিন রাতেই সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে কম বেশি দুঘর্টনার স্বীকার হচ্ছে সাধারন লোকজন। ঝুঁকিপূর্ণ বিধ্বস্ত এই সেতুটি বিকলাবস্থার কারনে চলাচলের একদম অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে আশপাশের দত্তেরাবাদ, শরীফাবাদসহ কয়েক গ্রামের শতশত কোমলমতি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও সাধারন লোকজন। বিকল্প কোনো যাতায়াত পথ না থাকায়, মরণফাঁদ জেনেও পার হচ্ছেন গ্রামবাসীসহ কোমলমতি শিশু-বৃদ্ধরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির দুইপাশের রেলিং ভাঙ্গা রয়েছে। প্রতিদিনই সেতুটি পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন একাধিক লোকজন। সেতুটির বেহাল দশার কারনে সেতুর রেলিং ধসে পড়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তেমন কোনো তৎপরতা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি জেনেও পার হচ্ছেন এলাকাবাসী। কিন্তু যোগাযোগের তাগিদে প্রতিনিয়ত সেতু দিয়ে কোন যানবাহনই চলাচল করতে পারছে না।
শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা খুবই করুণ। যে কোনো সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন পথচারীসহ শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া জমি থেকে ধান আনার জন্য কোন গাড়ি চলাচল করতে না পারায় কৃষকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই ভাঙ্গা সেতু দিয়ে পার হচ্ছেন।
স্থানীয় আদম আলী সিকদার জানান, কৃষি মৌসুমে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক শত একর জমির ফসল আনা নেয়া করা হয় এই ভাঙ্গা সেতুটির উপর দিয়ে। যা কৃষকদের জন্য খুবই দু:খ-কষ্টের কারণ।
দত্তেরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মোশারেফ হাওলাদার বলেন, প্রায় বিশ বছর আগে নির্মিত এই সেতুটির ঢালাই ধসে গিয়ে রড বের হয়ে গেলেও সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
ওই গ্রামের আব্দুল রব, হুমায়ন সিকদার জানান, সেতুটিতে মানুষ উঠলে কাপতে থাকে। অথচ সেতুটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কোনো মাথা ব্যথা নেই। কয়েক বছর যাবৎ শুনি সেতুটি মেরামত করা হবে, কিন্তু মেরামত কবে হবে তা কেউই বলতে পারে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটির অবস্থা খুবই বেহাল। সেতুটি সরেজমিন পরিদর্শণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।