ময়মনসিংহের ত্রিশালে শহীদ সাংবাদিক প্যারী মোহন আদিত্যের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে স্মরণ সভা করেছে উপজেলা প্রেসক্লাব।
রবিবার (৮ আগষ্ট) সন্ধ্যায় ক্লাব কার্যলায়ে এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণ সভা শেষে প্রয়াত শহীদ সাংবাদিক প্যারী মোহন আদিত্য ও অন্যান্য সকল শহীদদের স্বরণে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
উক্ত স্মরণ সভায় ত্রিশাল উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সারোয়ার জাহান জুয়েলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফকরুদ্দীন আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ত্রিশাল বাগান ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ বুলেটিন (অনলাইন) পত্রিকার ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রধান আনোয়ার সাদাত জাহাঙ্গীর, ত্রিশাল উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি আরিফুর রহমান রাব্বানী, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আসাদুজ্জামান পাইলট।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ত্রিশাল উপজেলা শাখার সভাপতি রানা ইমরান হাসান, ত্রিশাল উপজেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর সস্পাদক আব্দুল মালেক, অর্থ সম্পাদক তারেক হাসান বাবু, তথ্য সম্পাদক মোমেন তালুকদার, ধর্ম সম্পাদক ফজলুর রহিম, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার ত্রিশাল প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম, তথ্য সম্পাদক আনিছুর রহমান বিপ্লব, দৈনিক স্বাধীন সংবাদ ও দৈনিক গণজাগরণ পত্রিকার ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম তপু, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার ত্রিশাল প্রতিনিধি মনির হোসেন, দৈনিক বাংলাদেশের খবর পত্রিকার ত্রিশাল প্রতিনিধি ফাতেমা শবনম, সাংবাদিক আকলিমা খাতুন প্রমুখ।
সভায় বক্তাগণ শহীদ সাংবাদিক প্যারী মোহন আদিত্য স্মরণে স্মৃতিচারণ করে বলেন, সনাতন ধর্মের সাধক, সমাজ সংস্কারক, সমাজসেবক, সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব ও শিক্ষানুরাগী হিসেবে কাজ করে গেছেন তিনি। সৎসঙ্গ আশ্রম প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন শহিদ সাংবাদিক প্যারী মোহন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও আশ্রয় প্রদানকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযোদ্ধকালীন সময় অতিবাহিত করেন সেবার মহান মন্ত্র নিয়ে। ১৯৭১ সালের ৮ আগষ্ট টাঙ্গাইলের পাকুটিয়ার সৎসঙ্গ আশ্রমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের হাতে তিনি নৃশংসভাবে হত্যার স্বীকার হন। তিনি সব ধর্মের মিলনক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকুল চন্দ্রের প্রবর্তিত সৎসঙ্গের সহ প্রতি ঋত্বিক সৎসঙ্গ সংবাদের সহ-সম্পাদক, সৎসঙ্গের কার্যকরী পরিষদের সদস্য, সমাজসেবক এবং সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলেন।
বক্তারা আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন তার ঢেউ লাগে টাঙ্গাইলেও। ১৯৭১ সালের ৮ আগষ্ট পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা আশ্রমে গোলাগুলি শুরু করে এবং প্রেট্রোল ঢেলে দিয়ে আশ্রমের মন্দির, অফিস, বসত বাড়ি সহ সমস্ত কিছু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। সেল নিক্ষেপের আঘাতে মন্দির ধ্বংস করে দেয়। আর এই আশ্রমে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের রণাঙ্গণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে তাকে টেনে হিচড়ে গুলি করে অবশেষে হত্যা করা হয় তাকে। পাকিস্তানি দোসররা এভাবেই এই আশ্রম কেন্দ্রটি পুড়িয়ে ধ্বংস করেছিল যে তাহার কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি।