চলতি জুন থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় ১৬ শতাংশ বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড। এর মধ্যে ১০ শতাংশ বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ৬ শতাংশ। আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কম বেতনেই চলতে হবে এ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। বেতন কমানোর সিদ্ধান্তে খুশি নন ব্যাংকটির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও দেখাচ্ছেন।
করোনা তাণ্ডবের আগে দ্য সিটি ব্যাংকের আয় ও ব্যয়ের অনুপাত ছিল ৫৫ শতাংশ। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ টাকা আয় করতে ব্যাংকটিকে ব্যয় করতে হয়েছে ৫৫ টাকা। চলমান সংকটে আয়ের প্রায় সব পথ সংকুচিত হয়ে পড়ায় বর্তমানে ব্যাংকটির আয়-ব্যয়ের অনুপাত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ শতাংশে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বছর শেষে ব্যাংকটি লোকসানে পড়বে। এ অবস্থায় লোকসান ঠেকানোর পাশাপাশি কর্মীদের চাকরি বাঁচাতে ব্যয় সংকোচনের উদ্যোগ নিয়েছে ব্যাংকটি। এরই অংশ হিসেবে কর্মীদের বেতন, ইনক্রিমেন্ট ও অন্যান্য ভাতার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে দ্য সিটি ব্যাংক।
৩০ হাজার টাকার বেশি বেতন পান, এমন কর্মীদের বেতন-ভাতার ১০ শতাংশ কর্তন করেছে সিটি ব্যাংক। একই সঙ্গে বন্ধ থাকবে কর্মীদের বছর শেষের ইনক্রিমেন্টও। পদোন্নতি বন্ধ রাখার পাশাপাশি কর্মীদের পারফরম্যান্স বোনাস না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি। চলতি বছরের জুন থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বেতন-ভাতাসংক্রান্ত এ নতুন নির্দেশনা কার্যকর থাকবে।
বিষয়টিতে বেশ নাখোশ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। অন্যদিকে দ্য সিটি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী মাসরুর আরেফিন বলছেন, ১৬ নয় আমরা ১০ শতাংশ বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর পাশাপাশি আগামী বছরের ইনক্রিমেন্ট ও পারফরমেন্স বোনাস না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার মানে ১৬ শতাংশ নয়। এটি প্রতিষ্ঠানে লোকসান না করে টিকিয়ে রাখার জন্য করা হয়েছে।
বেতন কমানোর তিন কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথম কারণ আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়া। আমাদের আগে ১০০ টাকা আয় হলে ৫৫ টাকা ব্যয় হতো। এখন এ ব্যয় পরিমাণ ৬৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ করা হয়েছে। তবে আমানতের সুদ হার কমেনি। এটি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ২০ আয় কমেছে। আর তৃতীয় কারণ হচ্ছে আমানতকারী হোক আর ঋণগ্রহীতা হোক, অনেকেই ব্যাংকে আসছেন না। তাই স্বাভাবিকভাবেই আয় কমে আসছে।’