ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ঝিল্লুর রহমান আনম এর বিরুদ্ধে শিক্ষক এমপিওভুক্ত, শিক্ষক, গার্ড আয়া নিয়োগে ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ।
শিক্ষকদের এমপিও পেতে এই কর্মকর্তাকে ঘুষ না দিলে ফাইল পার হয় না । এমপিওভুক্তিতে ঘুষ দিতে অপরগতাকারী শিক্ষকরা এই অফিসারের হয়রানি শিকার হয়েও প্রতিবাদ করার সাহস পান না । স্থানীয় প্রভাবশালী একজন রাজনৈতিক দলের নেতার ডিও লেটারে ত্রিশালে আসায় কেউ তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অভিযোগ তুলেন না । তবে নতুন এমপিও পেতে গিয়ে উপজেলার প্রায় সকল শিক্ষককেই ঘুষ দিতে হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানিয়েছেন ।
জানা যায়, বিগত সময়ে অর্থাৎ ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ ত্রিশালে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসাবে যোগদান করেন জিল্লুর রহমান আনম । ঘুষ দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলায় বদলী করা হয় । সেখানে এক বছর থাকার পর একজন সাংসদের অদৃশ্য ছায়ায় ডিও লেটারে তিনি আবারও ত্রিশালে যোগদান করেন ।
জানা যায়, ইতিপূর্বে ত্রিশালের কিছু শিক্ষকদের এমপিরওর কাগজপত্র ত্রুটি বিচ্যুতি থাকায় জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে সেহিসাবে কাজপত্রাদি প্রেরণ করেন এই কর্মকর্তা । ঘুষ পাওয়ায় তন্মধ্যে ৫০ জনের ত্রুটি বিচ্যুত থাকার পরও এমপিওভূক্তি হয় । অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকদের নিকট থেকে তিনি মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন । একইভাবে ২০১৯ সালে ৭০ জনের নিকট থেকেও একই কায়দায় কাগজপত্র ত্রুটি বিচ্যুতি থাকার পরও এমপিরভূক্ত করে মোটা টাকা কামিয়ে নেন । তার কাছে ঘুষ দিলেই এমপিও হয় । অভিযোগ রয়েছে, ত্রিশালের বলহরি দাখিল মাদ্রাসায় গার্ড ও আয়া নিয়োগে ১৮ লাখ টাকা লেনদেন হয় । এখান থেকেও তিনি হাতিয়ে নেন মোটা টাকা । একইভাবে নওয়াপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় গার্ড ও আয়া নিয়োগে, রায়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ৈ আয়া নিয়োগে, জয়মনি উচ্চ বিদ্যালয়ে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগে, বাগান উচ্চ বিদ্যালয়েপ্রধান শিক্ষক নিয়োগ । সলিমপুর দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগে টাকা না পাওয়া ফাইল ফাইল আটকে রেখেছেন এই কর্মকর্তা । অর্থাৎ এমপিওভূক্তি, নিয়োগ তদ্বির সবই তিনি করেন বীরদর্পে । আর এসব অনায়াসাইে করেন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী এক নেতার ইশারায় । এই নেতা ফাইল পাশ করলেই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ঝিল্লুর রহমান আলমের কাছে ফাইল পাশ হয় ।
জানতে চাইলে জিল্লুর রহমান আলম জানান, ডিও লেটার দিয়ে আমাকে আমাকে আনা হয়েছে । তার কথা না শুনলে কাজ করতে পারবো না । তাই করতে বাধ্য হই । আপনারা সাংবাদিক । আপনারা তা জানেন । আমাকে ম্যানেজ করে চলতে হয় । উপজেলা প্রশাসনের আমার বিরুদ্ধে । তাই আমিও আর তাদের অফিসে যাই না । এনিয়ে রিপোর্ট করবেন না । করলে আমার ক্ষতি হবে । আমার চাকরি শেষ পর্যায়ে । জানা যায়, এই কর্মকর্তার বাড়ি পাশ্ববর্তী গফরগাঁও উপজেলায় ।
নাম প্রকাশে অনেক শিক্ষকই জানিয়েছে, ত্রিশালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কর্মকান্ড অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এমপিওর সঙ্গে যেন ঘুষ, দুর্নীতি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত ।