শিরোনাম
ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র পদে আমিন সরকারের বিজয় চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সোহেল গ্রেফতার ময়মনসিংহে ২ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার জাককানইবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফাহাদ, সম্পাদক আসলাম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি আজ সন্ধ্যা ৭টায় সিইসির ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আফ্রিকার প্রাণী নীলগাই, জেব্রা ও কমনইল্যান্ড পরিবারে যুক্ত হলো পাঁচ নতুন ত্রিশালের সাখুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রিফাত ও সম্পাদক রিজন জয়পুরহাটের কালাইয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালিত অধিকার নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ময়মনসিংহে মৌন মানববন্ধন

সুনামগঞ্জের হাওরের ধান পানির নিচে কৃষকের চাপা কান্না

এম এ মান্নান, মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) থে‌কে
  • আপডেট শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০২২
  • ৭৭ দেখেছে

সুনামগঞ্জের সবকটি হাওরের বাধ নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়মের কারণে বাঁধে ফাটল ১৭ টি হাওরের ধান পানির নিচে কৃষকের চাপা উত্তেজনার কান্না

ডুবছে ধান, কাঁদছে হাওরাঞ্চলের মানুষ, হাওরের বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের কারণে সবকটি বাঁধে ফাটল ১৭ টি হাওরের ধান পানির নিচে কৃষকের চাপা উত্তেজনা কান্না । সুনামগঞ্জের হাওর ডুবির ঘটনায় সর্বহারা অনেক কৃষক, বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি অনিয়মের কারণে ,দুর্বল বাঁধের মাটি ধসে অধিকাংশ বাঁধ ফাটল ধরেছে। মেরামত করছেন এলাকার কৃষক ও সরকারের প্রশাসন, এরকম অপ্রীতিকর অপ্রত্যাসিত কর্মকান্ডের বিষয়ের মূলত দায়ী কারা, সরকারের কতৃপক্ষের তদারকির অভাবে নাকি – প্রকল্প কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালনের অবহেলার কারনে, জানতে চায় এলাকাবাসী । সুনামগঞ্জে এ পর্যন্ত ১৭ টি হাওর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত ২০১৭ সালে আগাম অকাল বন্যার কবলে পরে দুমড়ে দুমড়ে কাঁদছিল কৃষকেরা, জোয়ারের পানি এবং পাহাড়ি ঢলে, সুনামগঞ্জের সবকটি হাওরের কাঁচা ধান পানিতে তলিয়ে গেলে কৃষকরা সর্বোহারা হয়েছিল, সেই ক্ষতি এখনো পুষিয়ে নিতে পারেনি এলাকার ৮০ ভাগ কৃষক পরিবার ।

দেখা গেছে গত ২০১৮/১৯/২০/২১ সালে বোরো ফসল কৃষকরা নিরাপদে ঘরে তুলেছে, দেখা দেয়নি দুর্যোগ এবং অকাল বন্যা, ফলে সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবোর হেয়ালি পনা ও উদাসীনতার প্রতিফলন ঘটেছে এবছর। যাঁর দরুন বাঁধ রক্ষার বিপর্যয় সংগ্রামে নেমেছে কৃষক, এবিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান ২০২২ সালের বোরো মৌসুমে ফসল রক্ষা বাঁধ যেখানে ২৮ শে ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করবার কথা ছিল সেখানে এপ্রিলেও প্রকল্প পি আই সি রা বাঁধের কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। কতৃপক্ষের দায়িত্ব বানরা, পি আই সি কমিটি গঠনে নীতিমালা লংঘন করে প্রকৃত কৃষক বাদ দিয়ে অকৃষক এমন লোকদের দিয়ে পি আই সি করা হয়েছে। এক এলাকার বাঁধ অন্য এলাকার লোক দিয়ে পি আই সি করা হয়েছে, নামে মাত্র পি আই সি কাজ করেছে পর্দার আড়ালে অসাধু সেন্ডিকেটরা। এদেরকে ফায়দা লুটতে সুযোগ করে দিয়েছে কিছু রাজনৈতিক নেতারা, এটাও অনুসন্ধানের বিষয় । মূলত যথাসময়ে মাটির কাজ না করায়, কাঁচা মাটির নড়বড়ে বাঁধের ফাটল বা পানির ছোঁয়া পেয়ে নড়বড়ে বাঁধ ভেঙে ফসল হানীর ঘটনা দেখা দিয়েছে। তদারকির অভাবে বাঁধের দুর্নীতি অনিয়ম যেমনটা হয়েছে, স্লো বিং, ড্রাইমেশিন, কম্প্রেসার, দুরমুজ ছাড়াই দায়সারাভাবে কাজ করেছে। ব্যাপক দুর্নীতি লুটপাট অনিয়মের কথা অনেকেই যথাসময়ে না বলে এখন বলেছেন এই দুঃসময়ের। সুযোগী বক্তব্য দিচ্ছেন সমাজ সেবার ধারক বাহক হিসেবে, নেতৃত্ব জাহির করতে এখন তারা হাওরে বাঁধে গিয়ে বক্তব্য রাখছেন । বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা সমাবেশে, মাঠে,ঘাটে, হাটে, হাওরের ঝুঁকি পূর্ণ বাঁধে গিয়ে বক্তব্য রাখছেন, এবং একাধিক ফেসবুকে বক্তব্যের ছবি ভিডিও ভাইরাল করছেন । অথচ, বাঁধের কাজ চলমান থাকা অবস্থায় কোনো নেতা, সমাজ সেবী, সাংবাদিক সরজমিনে দুর্নীতি অনিয়মের প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। তবে হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতারা, বিভিন্ন সমাবেশে দুর্নীতি বন্ধ এবং কৃষকের ফসল নিরাপদে ঘরে তোলার উদ্যোগ নিতে, ফসলের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে এ-সব কথা, সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। কৃষকের অধিকার ও টিকসই বাঁধ নির্মাণ সহ এসকল দাবী জানাচ্ছেন এবং সরকারের কাছে তুলে ধরছেন।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার নজরখালি বাঁধ টাঙ্গুয়ার হাওর, শনির হাওর, টগার হাওর, ধর্মপাশা চন্দ্রসোনার তাল, ডুবাইল হাওর, দিরাই সহ ১৭ টি বিভিন্ন হাওরের বাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে । গত ৬ এপ্রিল বুধবারে এক সমাবেশে, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি শাহানা আল আজাদ সহ অন্যান্য বক্তারা বক্তব্যে

উল্লেখ করে বলেন যে, গত ২৮ মার্চ নজরখালী বাঁধে ফাটল দেখা দিলে, বিষয়টি সাথে সাথে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহীত করা হয়েছে । কিন্তু এর পাঁচদিন পরে বাঁধ ভেঙ্গে হাওর তলিয়ে গেলও, অথচ প্রশাসন কি ভূমিকা নিয়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ। হাওর ডুবির পর পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলীর আচরণ কি ছিল ভাবার বিষয়। ৯ লাখ টাকার বরাদ্দের নজরখালী বাঁধ, তারা বিভিন্ন অজুহাতে পাশকাটিয়ে অস্বীকার করছেন।

সচেতন মহল এবং হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আশংঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সুনামগঞ্জে পাউবোর অবহেলার জন্য সরকারী, বেসরকারী গোয়েন্দা সংস্থা সমুহ জরিপ করে সকলকে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি প্রদান করার দাবী করেছে সংগঠনটি । পাউবো ও স্থানীয় দালাল চক্র অবৈধ ভাবে বাঁধের টাকা আত্নসাৎ করে, বাঁধ দুর্বল করেছে, তাই বাধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। হাওর ডুবির ক্ষতি ও কৃষকের দায় নিবে কে। এর জন্য দায়ী কারা, কেন এত দুর্নীতি, এসব এখন খোঁজে বের করতে হবে। আর যদি একটি বাঁধ ভাঙ্গে, আর যদি হাওর ডুবি হয়,তা হলে সুনামগঞ্জ পাউবো ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করা হবে। হাওর ডুবির সকল দায় তাদের নিতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সংক্রান্ত আরও খবর

ফেইসবুক পেজ

error: Content is protected !!