পোল্ট্রির খাবারের দাম বৃদ্ধিতে কাউনিয়া উপজেলার কয়েকশো পোল্ট্রি খামারি লোকসানে পড়েছেন। গত বছরের করোনার ধাক্কা সামাল দিতে অনেকেই লোন করে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে আরো বিপাকে পড়েছেন। অনেক পোল্ট্রি খামারি এ ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশাতে চলে যাচ্ছেন। সরেজমিনে কাউনিয়া উপজেলার পোল্ট্রি খামারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বছর দুয়েক আগেও যেসকল পোল্ট্রি খামার বড় ছিলো সেগুলো ছোট করে ফেলেছেন খামারিরা। অনেকেই পোল্ট্রি খামারের জিনিসপত্র বিক্রি করে দিয়েছেন।
অনেকে অন্য পেশাতে না যেতে পেরে এখনো লোকসান গুনছেন। প্রাণীসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, নিবন্ধিত লেয়ার ৩৬টি ও নিবন্ধিত ব্রয়লার ৪৫টি ও অনিবন্ধিত লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির খামার ১৮৫টি। বালাপাড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড এর ব্রয়লার খামারি মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন,মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধির ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। চার বছর আগেও যেখানে বস্তা প্রতি ফিডের মূল্য ছিল এক হাজার দুইশত টাকা। চলতি বছর প্রতি বস্তায় গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে মাথায় হাত দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। আমি ব্যাবসা গুটিয়ে নিব আর কত ক্ষতি করবো। প্রশাসন ফিডের দামের সাথে ব্রয়লারের দাম সমন্বয় করে দিলে ভাল হতো। একই এলাকার মুরগির খামারি মোঃ মফিজ উদ্দিন বলেন, ৪-৫ বছর আগেও খাবারের মুল্য এক হাজার দুইশত টাকা ছিলো। আর এখন মুরগির খাবার কিনতে হচ্ছে তিন হাজার তিনশ থেকে চারশ টাকা দরে। এদিকে বাজারে ডিম বিক্রি করতে গেলে কম দাম পাওয়া যায়। অথচ ডিম কিনতে গেলেই দাম বেড়ে যায়। শতকরা ৮০ভাগ খামার ধ্বংস হয়ে গেছে আর ২০ ভাগ খামার আছে এগুলোই ধ্বংসের পথে। হরিচরনলস্করের খামারী মোঃ আখের আলী বলেন, কিছুদিন আগে আমার খামারে ব্লাড-ফ্লু হয়ে সব মুরগী মারা যায়, আমার যে ক্ষতি হয়েছে খামার বন্ধ করে পেশা পরিবর্তন করেছি। আমাকে কোন ধরনের সহযোগীতা করা হয়নি। কাউনিয়া পোল্ট্রি খামার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল পোল্ট্রি খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণে সঠিকভাবে নজরদারি করলে খামারিরা রক্ষা পাবেন। কাউনিয়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সিঞ্চিতা রহমান বলেন,সারা দেশেই এক রকম অবস্থা, ফিডের দাম বৃদ্ধিতে খামারিদের লাভটা কমে গেছে।খামারিরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।সরকার যদি পোল্ট্রি শিল্পের দিকে মনোযোগ দিতেন।আর ভ্যাট ও ট্যাঙ্রে পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হতো তাহলে খাবারের মূল্যটা কমে যেতো।আর কাঁচামাল সহজলভ্য করে বিদেশে রপ্তানি কিছুদিনের জন্য কমিয়ে দিলে বা বন্ধ করে দিলে ভালো হতো। কাঁচামালের রপ্তানি বন্ধ করা হলে সেক্ষেত্রে ফিড বানানো ও ফিডের মূল্যটা সহনীয় পর্যায়ে থাকতো।