ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় কৃষি বিভাগের পরামর্শে স্বল্প খরচে অধিক মুনাফা অর্জনে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। লাভজনক এই ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর কৃষকদের সার বীজ ও কৃষি পুনর্বাসনসহ পরামর্শ সহায়তা দিয়ে কৃষকদের উৎসাহী করছে; ফলে দিন দিন কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বাচোর, রাতোর, লেহেম্বা, হোসেনগাঁও, ধর্মগড় ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন এলাকায় ক্ষুদ্র ও প্রাান্তিক কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল NK40, সম্রাট, পালওয়ান, টাইটান, 981 সহ বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের ভুট্টা আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেছে। মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি মাছ, হাঁস-মুরগী ও গো-খাদ্য হিসেবে ভুট্টার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এর চাহিদাও বেড়েছে অনেক বেশি। ভুট্টা গাছের পাতা সুষম গো-খাদ্য এবং কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, ফলে একদিকে যেমন কৃষক তার গবাদি পশু পালন ও জ্বালানি চাহিদা মেটাতে পারে অপরদিকে বাজারে ভুট্রার ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষক এ ফসলে আগ্রহী হয়ে উঠছে। আর তাই উপজেলার অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিগুলোতে এখন ব্যাপক ভুট্টার চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ধান ও অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশী লাভ হওয়ায় কম খরচে অধিক মুনাফার আশায় বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছে এ উপজেলার কৃষকরা । বাচোর ইউনিয়নের কৃষক আন্ধারু জানান, ভুট্টা চাষে জমিতে পানি সেচ কম লাগে এবং ফলনও অন্য ফসলের তুলনায় বেশী হয়, ফলে তিনি ধান আবাদের চেয়ে ভুট্টার আবাদে অধিক আগ্রহী। একইভাবে রাতোর ইউনিয়নের ফরিদ পাড়া গ্রামের কৃষক অতুল মহন্ত বলেন ভুট্টা মাছ ও মুরগীর খাবার হিসেবে ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। তাছাড়া ভুট্টা বাজারে বিক্রি করার পরও এর শুকনো গাছ ও মোচা বাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
বাংলাগড়ের মেম্বার মোঃ এরশাদ আলী বলেন, আগে ভুট্টা চাষের প্রতি তার তেমন আগ্রহ ছিলো না। কিন্তু অন্য কৃষকদের ভুট্টা আবাদ করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে দেখে উৎসাহী হয়ে প্রথম বছরেই খরচ মিটিয়ে তিনি বিঘা প্রতি পঁচিশ হাজার টাকা লাভ করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথ জানান, চলতি বছরে উপজেলায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিটি এলাকায় মাঠ পর্যায়ে ঘুরে কৃষকদের ভুুট্টা চাষে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন। মাঠ জরিপ অনুযায়ী এ বছর উপজেলার প্রত্যেকটি এলাকায় ব্যাপক হারে ভুট্টার চাষাবাদ হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ বছরের রবি ও খরিপ মৌসুমে রাণীশংকৈলে হাইব্রিড জাতের ৪৮৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্রার চাষ হয়েছে গতবার ছিল ৩৫০০ হেক্টর জমিতে এবার অনেক বেশি জমিতে চাষ করা হয়েছে। ১৭০০ জন কৃষক কে প্রনোদনার আওতায় আনা হয়েছে।