উজানে পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে সিরাজগঞ্জে দ্বিতীয় দফায় টানা তিনদিন ধরে যমুনা নদীর পানি বেড়ে আবারও বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে প্রায় বিশ দিন ধরে নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে দুর্ভোগে থাকা পাঁচ উপজেলার পানিবন্দি ১ লাখ ৬০ হাজার অসহায় মানুষদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জের উত্তরের উপজেলা কাজিপুর পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে রোববার (১২ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে বিপদসীমার মাত্র ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং একই সময় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ডপয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
যমুনা নদীতে আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।এদিকে যমুনা নদী অববাহিকার সিরাজগঞ্জ জেলার বন্যা কবলিত পাঁচ উপজেলা কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুরে রাস্তা-ঘাট ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যমুনা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষেরা।
বিগত ২০ দিন যাবত বন্যা কবলিত পাঁচটি উপজেলার ১ লাখ ৬০ হাজার বানভাসি পানিবন্দি অসহায় মানুষেরা চারিদিকে অথৈই পানির মধ্যেই ঘরের ভিতর চৌকি ও খাটের উপর মাচাং বানিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কেউ কেউ ঘর-বাড়ি ছেড়ে উঁচু বাঁধ বা সরকারি স্কুল ঘর ও আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাই নিয়েছেন। খুব কষ্টে পড়েছেন বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও শিশুরা। গবাদি পশু-পাখি নিয়েও চরম বিপাকে পানিবন্দি পরিবারগুলো। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে বন্যা দুর্গত এলাকায়।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, দ্রুত গতিতে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, পাঁচ উপজেলার অনেকে ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।