বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ফেসবুকে আইডি খুলে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি ও পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে কৌশিক বিশ্বাস নামক একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায় এ ঘটনায় সোমবার রাতে স্থানীয় যুবলীগ সদস্য উজ্জল খান(৩৫) ও জামায়াত সদস্য নুরুজ্জামান হাওলাদার(৩৮) এর নেতৃত্বে ও এক ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে কৌশিক(২৩) এর বাবার বসতবাড়ি ভাঙচুর ও বাড়ির উঠানের খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
পুলিশ আরো জানায়, প্রায় ৩০০ জন নিয়ে তারাবীহ’র নামাজের আগে যুবলীগ ও জামায়াতের দুই সমর্থক এর নেতৃত্বে এক ঝটিকা মিছিল বের করে কৌশিকের শাস্তির দাবিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও এলাকাবাসী ।
এক পর্যায়ে তার বাবার বসত বাড়ি ভাঙচুর ও খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয়। ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তিকারী একই গ্রামের বাসিন্দা রমেন বিশ্বাসের ছেলে কৌশিক বিশ্বাস। কৌশিক ৭ দিন আগে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে।তিন বছর আগে সে ভারতে চলে যায় এবং সেখানে বসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর পোস্ট দেয়ায় আইসিটি এ্যাক্ট এর মামলায় গত বছর গ্রেফতার হয়ে ২৮ দিন ভারতীয় জেল হাজতে আটক ছিল। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম শ্রেণী পাশ এবং সে ভারতে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। তার বাবা সহ বংশের অন্যান্যরা আমরবুনিয়া গ্রামের আদিবাসী।কৌশিক ভারতের থাকাকালীন সময়ে বিজেপি দলের সদস্যও ছিল বলে জানাগেছে।
পুলিশের কাছে সে আরো স্বীকার করেছে ভারতে থাকাকালীন সময়ে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্য মন্ত্রীসহ বিভিন্ন সময়ে লোক সম্মুখে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আপত্তিকর কথা বলতো। সে তার ব্যবহৃত “জেহাদি তোষনকারী” আইডি নাম দিয়ে ইসলাম ধর্ম ও নবীজি হযরত মোহাম্মদ (সঃ)কে কটুক্তি ও অবমাননা করে পোস্ট দেয়। এ পোস্টটি সে ভারতে থাকাকালীন করেছে মর্মে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়।
এই ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত পুলিশ কৌশিক সহ ১৮ জনকে আটক করেছে। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কৌশিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে অপরদিকে কৌশিকের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২০ জনকে আসামি করে আরো একটি মামলা করেছে কৌশিকের বাবা রমেন বিশ্বাস।
পুলিশ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ধর্ম অবমাননাকারী কৌশিক সহ ভাংচুরের ঘটনায় ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। গত রাত্রে ঘটনার পরপরই বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক, মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা এবং আজ বিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয় দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন।