জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪ তম জন্ম জয়ন্তী ও বাংলাদেশে জাতীয় কবিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ৫১ তম বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইদিনব্যাপী নজরুল জয়ন্তী শুরু হয়েছে।
প্রথমদিন ‘বঙ্গন্ধুর বাংলাদেশে নজরুল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে নজরুলের আগমনের ৫১ বছর পূর্তিকে স্মরণ করা হয়। কবি প্রত্যাবর্তনের ৫১ বছর পূর্তিকে স্মরণ করে বুধবার (২৪ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাহি সাম্যের গান মঞ্চে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে নজরুল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এম.পি.। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করবেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, কবি নজরুলই আমাদের জাতীয় কবি হবেন এই ভাবনার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি কবিকে দেশে এনে তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়েছেন। অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। তিনি আরও বলেন, ১০ জ্যৈষ্ঠ কবি নজরুল দেশে এসেছিলেন, ১১ জ্যৈষ্ঠ তাঁর জন্ম বার্ষিকি। ৫১ বছর আগে কবির প্রত্যবর্তন হয়েছিল;১২৪ বছর আগে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতার হাত ধরে তিনি দেশে ফিরেছিলেন। সেই দিনকে আমরা কবি জন্মজয়ন্তীর সঙ্গে মিলিয়ে একদিন আগে থেকেই আমরা ভবিষ্যতে সরকারিভাবে উদযাপন করা শুরু করবো। আর এ জন্য নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। কেননা তিনিই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আমাদের সামনে এনেছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কবি নজরুল আর বঙ্গবন্ধু ছিলেন যেন একই আত্ত্বা। তাদের কর্ম ও স্বপ্ন ছিলো একই ধরনের। নজরুল যেমন ছিলেন বিদ্রোহের কবি, প্রেমের কবি তেমনি বঙ্গবন্ধুও ছিলেন রাজনীতির কবি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা এই স্বাধীন দেশ পেয়েছি। আর স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই জাতির পিতা কবি নজরুলকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন।
পদকপ্রাপ্ত খিলখিল কাজী বলেন, কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে আমরা যেমন অনেক কাজ করছি তেমনি তাঁর অনেক কাজ এখনো বাকী রয়ে গেছে। কাজী নজরুল ইসলাম শুধু বাংলার মধ্যে বেঁধে রাখার কবি নন। এখন সময় এসেছে সেদিকে নজর দেওয়ার। কবি নজরুলের বিদ্রোহীসহ অন্যান্য কবিতাগুলো অনুবাদের মধ্যদিয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে হবে। নজরুলের জীবনকে তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ১৯৭২ সালের ২৪ মে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে এনেছিলেন। এরপর নজরুল আর ভারতে ফেরত যাননি। ১৯৭৬ সালে তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁর মৃত্যুর পর বাংলাদেশের মাটিতে কবির সমাধি সৌধ নির্মিত হয়। সমাধিসৌধ বাঙালির পবিত্র অঙ্গন। বঙ্গবন্ধু সেদিন নজরুলকে বাংলাদেশে না নিয়ে এলে এদেশে নজরুলের আগমন সত্যিই হতো কী না সে প্রশ্ন থেকে যায়। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর আন্তরিক প্রচেষ্টা ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যকার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও যোগাযোগের কারণে সেদিন কোন পাসপোর্ট, ভিসা, ইমিগ্রেশন ছাড়াই নজরুলকে বাংলাদেশে আনা সম্ভব হয়েছিল।