রাজশাহীর তানোরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও শ্রমিক সংকট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকরা। এবার বোরো ধানের ফলন হচ্ছে বিঘা প্রতি প্রায় ৩০ থেকে ৩৫মন পর্যন্ত। তার পরেও ভালো ফলন পেলেও কৃষকের মাঝে নেই স্বস্তি। শ্রমিক নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে হতাশার ছাপ। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি বোরো ধানের মাঠে বোরো ধান পেকে ঝুম ঝুম করছে। অথচ মিলছে না ধান কাটা শ্রমিক। আবার শ্রমিক পাওয়া গেলেও দিতে হচ্ছে দুইগুণ মজুরি। কেউ আবার দিন চুক্তি জমির ধান কেটে নিচ্ছেন। এতে করে একজন শ্রমিক প্রতি দিতে হচ্ছে ৪শ টাকা থেকে ৫শ টাকা। ফলে এক বিঘা বোরো ধান কেটে নিতে কৃষকের খরচ হচ্ছে ৬হাজার থেকে ৭হাজার টাকা। যা এর আগে খরচ হত ৩হাজার থেকে ৪হাজার টাকা। কিন্তু এবার বাহির থেকে এখনো তেমন শ্রমিক না আশায় স্থানীয় শ্রমিকরা সিন্ডিকেট করে দিগুণ বেশি টাকা নিয়ে ধান কাটছেন। কৃষকদের কেও এক প্রকার বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়ে বোরো ধান কেটে নিতে হচ্ছে।
জানা গেছে,এবছর রমজান মাসে বোরো ধান পাকায় শ্রমিক পেতে একটু সমস্যা হচ্ছে কৃষকের। তবে ঈদের পরপরই বহিরাগত শ্রমিকরা আসলে কৃষকের ধান কাটা নিয়ে কোন সমস্যা হবেনা।
তানোর পৌর এলাকার গুবিরপাড়া গ্রামের তরুণ কৃষক সারোয়ার হোসেন জানান, ৪দিন ধরে বিলকুমারী বিলে বোরো ধান কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। শ্রমিক না থাকায় আদিবাসী নারী শ্রমিক দিয়ে দিন চুক্তি ধান কেটে নিতে হয়েছে। এতে আমার আড়াই বিঘা জমির ধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলেত প্রায় ২১হাজার টাকা মত খরচ হয়েছে।
কৃষক মতিউর রহমান জানান, সে সাত বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। তার সবগুলো ধান পেকে গেছে। কিছু ধান কাটাও হয়েছে। এলাকার শ্রমিক না পাওয়ায় সে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে শ্রমিক এনে তার ধান কেটে নিচ্ছেন।
তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবার কৃষকের বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঝে মধ্যে আকাশের আবহাওয়া খুব খারাপ আকার ধারণ করছে। যেকোনো মুহূর্তে ঝড় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই দ্রুত কৃষকদের ধান কেটে তুলে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি। এবার তানোর উপজেলা জুড়ে বোরো ধান চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে বিলের জমিতে বোরো চাষ হয়েছে ১হাজার ১০০ হেক্টর।