রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার জিওল দারুচ্ছুন্না দাখিল মাদ্রাসায় অতি গোপনে বিশাল অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সকালের দিকে মাদ্রাসার একটি কক্ষে পছন্দের প্রার্থী ও প্রক্সিরা পরিক্ষা দিচ্ছিলেন বলেও দেখা গেছে । এঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকা বাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে । আর এর সবকিছু পরিচালনা করছিলেন মাদ্রাসা সুপার এক সময়ের শিবির জামাত ক্যাডার আসলাম উদ্দিন। অবশ্য তিনি এখন খোলস পাল্টিয়ে ওলামালীগ হয়েছেন। এই সুপারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির অতীতের নিয়োগ নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে প্রায় সকাল ১০ টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার একটি কক্ষে দুই পদে মাত্র ৬ জন চাকুরী প্রত্যাশী পরিক্ষা দিচ্ছেন। একজন মাওলানা শিক্ষক পরিক্ষা দেখভাল ও সহযোগীতা করছেন। অফিস কক্ষে কাগজ পত্র ডিডিকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন সুপার আসলাম। তিনি মাদ্রাসা বোর্ডের উপপরিচালক মনিরুজ্জামান কে ফাইল পত্র দেখাচ্ছিলেন। সেখানে ডিডি ও সুপারের কাছে প্রশ্ন করা হয়, আপনারা এখানে আর চাকরি প্রার্থীরা পরিক্ষা দিচ্ছে দেখা দেখি করে। বিষয় টি প্রথমে খুব একটা তারা আমলে নেননি। কিন্তু পরে ঘটনার বাস্তবতা পান। ওই সময় আসেন ওই গ্রামের কাউন্সিলর মুন্জুর রহমান, তিনি জানান চাকুরী দেওয়ার আগেই লাখলাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এলাকা তো দুরে থাক গ্রামের লোকজনও জানেনা নিয়োগ হচ্ছে। এসব পরিক্ষা লোক দেখানো। দুই জনের চাকুরী হবে, আর বাকি চারজন প্রক্সি দিতে এসেছে। তার কাছেই লঙ্গি পড়া দুই যুবক ছিল। তাদের মধ্যে তরিকুল নামের একজন জানান এর আগে নৈশ প্রহরী পদে খাইরুল কে পাঁচ কাঠা জমির বিনিময়ে চাকুরী দেওয়া হয়েছে। আমিও প্রার্থী ছিলাম টাকা কম তায় হয়নি। সেখানে আসেন বয়োজ্যেষ্ঠ এক ব্যক্তি তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার সময় মাথায় করে মাটি বহন করেছি। এতকিছু হয়ে যায় গ্রামের কেউ জানতেও পারেনা। তার এমন ক্ষোভের কথা মোবাইলে ধারন করতে চাইলে তিনি অনুরোধ করে বলেন আমি গরীব অসহায় ঝামেলার মধ্যে থাকতে চায় না। আবেগ হল বললাম এই আর কি।
তখন অফিস থেকে ডিডি ও সুপার বাহিরে ছিলেন, সুপারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিন দফায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। কয় পদে পরিক্ষা হচ্ছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন দুই পদে নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া, মাত্র ৬ জন পরিক্ষার্থীর বিষয়ে বলা হলে সুপার সাব জানায়, আবেদন পড়েনি।
তবে এসময় ডিডি মনিরুজ্জামান এসব কথার মাঝেই হাটতে হাটতে পরিক্ষা কক্ষে যাওয়ার সময় বলেন এসব পদে সহজে কেউ আবেদন করতে চাইনা,অনেক এলাকায় ডেকেও এসব চাকুরী করতে চান না, এমন অবান্তর কথা বলে পরিক্ষার কক্ষে অনিয়ম দেখে দুরে দুরে বসান তিনি। পরিক্ষা শেষ হয়ে যায়। ডিডি একটি সাদা কার নিয়ে আসেন।
মাত্র ৬ টি আবেদন পড়ার কথা সুপারকে বলা হলে ওই সময় জিওল গ্রামের ও তানোর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর উপস্থিত হয়ে বলেন কেউ নিয়োগের বিষয়ে জানেই না, তাহলে আবেদন কি ভাবে পড়বে, কবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে সুপার ও কয়েকজন ছাড়া কেউ জানেনা।
কাউন্সিলর সহ বেশকিছু স্হানীয়রা জানান, আকচা গ্রামের মোস্তফা তার স্ত্রীর আয়া পদে দেড় বিঘা জমি বন্ধকসহ ঋনে প্রাথমিক ভাবে ১২ লাখ ও নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে জিওল গ্রামের সৈয়দ আলী দুই বিঘা জমি বন্ধকসহ বিভিন্ন ভাবে ছেলে নয়নের চাকুরির জন্য ১২ লাখ মোট ২৪ লাখ টাকায় নিয়োগ হয়েছে বলেও জানান কাউন্সিলর ।
টাকা লেনদেন বিষয়ে সুপার আসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলেন কি ভাবে নিয়োগ হয় সবারই জানা আছে বলে আর কিছু বলেন নি।
ওই সময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমান রহস্য জনক কারনে নিরব ভূমিকায় ছিলেন।