রাজশাহীর তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের হাতিশাইল-নেজামপুর মাঠে পানি প্রবাহের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ফসলী জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করায় অসময়ে মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি টানা পানি হলে যেকোনো মুহূর্তে ৪/৫টি গ্রামে পানি ঢুকে প্লাবিত হওয়ারও আতংকে রয়েছে গ্রামবাসী। এদিকে অসময়ে জলাবদ্ধতার কারণে কামারগাঁ ও কলমা দুটি ইউপির প্রায় দেড় শতাধিক বিঘা ফসলী জমি অনাবাদি হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে এর দায় নিবে কে? যেখানে সরকার প্রধান বলছেন দেশের এক ছটাক কৃষি জমি অনাবাদি রাখা যাবে না, সেখানে হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমি অনাবাদি করেছে এদের খুঁটির জোর কোথায় ? না কি এরা সরকার প্রধানের থেকেও ক্ষমতাধর! এ ঘটনায় অবৈধ পুকুর খননকারীর বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে, বিরাজ করছে বিস্ফোরণমুখ পরিস্থিতি বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয়রা জানান, কামারগাঁ ইউপির কতিপয় চেয়ারম্যানকে বিপুল অঙ্কের টাকা আর্থিক সুবিধা দিয়ে ভেঁকু দালাল এবং পুকুর সিন্ডিকেট চক্রের মুলহোতা কেশরহাটের বির্তকিত জনৈক সাদিকুল ইসলাম ওরফে শাফি ও আব্দুল করিম লাঠির জোরে ফসলী জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করেছেন। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অবৈধ পুকুর খননের ফলে অসময়ে জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার অমৃতপুর, আজিজপুর, নড়িয়াল, চন্দনকোঠা, ঘৃতকাঞ্চন, কুজিশহর, হাতিনান্দা, নেজামপুর, হরিপুর, ছাঐড় ও হিরানন্দপুরসহ প্রায় ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার বিঘা ফসলী জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। এতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হবার পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। হাতিনান্দা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক লীগ নেতা মুন্তাজ আলী, সৈনিক লীগ নেতা তানভির রেজা ও জেলা সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুর রহমান মাহাম বলেন, ভেঁকু দালালদের দৌরাত্ম্য দেখে মনে হয় দেশে আইন নাই, তা না হলে প্রকাশ্যে দিবালোকে কেউ এভাবে কৃষি জমি ধ্বংস করতে পারে। এবিষয়ে কামারগাঁ ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলী প্রামানিক ও ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন যদি অবৈধ পুকুর প্রতিরোধ না করে তাহলে মানুষ কার কাছে যাবে। এবিষয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া সরদার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বার বার বলছে কৃষি জমির শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু এরা প্রকাশ্যে কৃষি জমি ধ্বংস করে অবৈধ পুকুর খনন করেছে। তিনি বলেন, এর দায় উপজেলা প্রশাসন এড়াতে পারে না। তিনি এসব অবৈধ ফের ভরাটের দাবি করেছেন। এবিষয়ে উপজেলা এসিল্যান্ড স্বকৃীতি রানী প্রামানিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও পংকজ চন্দ্র দেবনাথের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।