জামালপুরে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে বৃষ্টি প্রার্থনা করে ইসতিসকার নামাজ ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু’র উদ্যোগে এই নামাজ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) জামালপুর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে এ বিশেষ নামাজ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।
নামাজে স্থানীয় শতশত মুসল্লি, আলেম ও ওলামা অংশগ্রহণ করেন। ইসতিসকার নামাজ ও দোয়া পরিচালনা করেন শহরের বড় মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুল্লাহ। এতে প্রায় ৫ সহস্রাধিক মুসুল্লি যোগ দেন ।
নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, জামালপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট আমান উল্লাহ আকাশ, পৌর ঈঁদগা মাঠের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মাসুম রেজা রহিম প্রমূখ।
নামাজ আদায় করতে আসা মুসুল্লিরা জানান, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ এবং অনাবৃষ্টির কারণে কৃষিজমি শুকিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে ফসল উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। মানুষ গরমে ও তাপপ্রবাহে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ জন্য আল্লাহর রহমত ও বৃষ্টি কামনায় এ নামাজ আদায় করা হয়।
নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া মুনাজাত করা হয়। এ সময় মুসল্লিরা চোখের পানি ফেলে তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। একই সঙ্গে চলমান বৈশ্বিক সংকট থেকে মুক্তির জন্যও দোয়া করা হয়।
জামালপুরে টানা কয়েক দিন ধরেই তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে ফসলের মাঠ।
তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি কামনা করে নামাজ আদায় করার আয়োজনে ভীষণ খুশি উপস্থিত মুসুল্লিরা।
নামাজ আদায় করতে আসা শহরের শেখেরভিটা এলাকার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বর্তমান রোদ-গরমে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা একধরনের বড় দুর্যোগ। তাই দুর্যোগ থেকে মুক্তি পেতে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি নামাজ আদায় করতে এসেছেন।
নামাজে উপস্থিত মুসুল্লি কাজী টিপু সুলতান বলেন, যেকোনো বিপদ থেকে রক্ষা পেতে আমরা প্রথমেই সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করি। এ নামাজ ও দোয়ার মধ্য দিয়ে সেই কাজ করা হলো। সৃষ্টিকর্তা রহমত বর্ষণ করবেন বলে আশা করছি।
এ প্রসঙ্গে মাওলানা মুফতি মনিরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে বৃষ্টি নেই। অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, গবাদিপশু কষ্ট পাচ্ছে। খেতখামার ও বাগানে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতেই ধর্মীয় নীতি অনুযায়ী, দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টি ও পানি প্রার্থনা করা হয়েছে।
জামালপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু জানান, কালবৈশাখীর মৌসুমেও বৃষ্টির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উল্টো টানা তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠছে। মাঠে রোদে পুড়ে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। আম-লিচুর গুটি ঝড়ে পড়ছে। শ্রমজীবী মানুষ রোদে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা বৃষ্টির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার আয়োজন করেছিলেন। নামাজে সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য ফেসবুকে প্রচারণা ও শহরজুড়ে মাইকিং করা হয়েছিল।