জামালপুরের মেলান্দহের বহুল আলোচিত সেই গাইনী ডাক্তার সুলতানা পারভীনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। ২২ আগস্ট দিবাগত রাত ১১টার দিকে সুলতানা পারভীনের ভগ্নিপতি আসাদুল হাফিজ চৌধুরী বাদি হয়ে মেলান্দহ থানায় মামলা (নং-২৩) দায়ের করেন। বাদি আসাদুল হাফিজ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মেলান্দহ থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান,মামলায় সুনির্দিষ্ট কোন আসামী করা হয়নি। বাদি আরজিতে ডাক্তার সুলতানা পারভীনকে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচিত করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন।
আত্মহত্যার জন্য কে বা কারা প্ররোচিত করেছে? এমন প্রশ্নে ওসি বলেন,লাশ উদ্ধারের পর থেকেই তদন্ত চলছে। মামলার সূত্র ধরেও তদন্ত হচ্ছে। সন্দেহভাজনদের মোটামোটি শনাক্ত করা হলেও; অধিকতর তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না। পোস্টমর্টেম এবং ভিসেরা রিপোর্টের জন্যও অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
গত শনিবার স্বজনদের নিয়ে ডা. সুলতানা পারভীনের কক্ষ থেকে প্রায় ২৩ হাজার টাকা, চেকে স্বাক্ষরিত ২০ হাজার টাকার একটা পাতা উদ্ধার করা হয়েছে।
মৃত্যুর আগে ডা. সুলতানা পারভীনের লেখা ডায়েরিতে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন-ডায়েরিতে অনেক লেখাই আছে। তদন্তের স্বার্থে এ গুলো বলা যাচ্ছে না। তদন্তে প্রকৃত দোষি শনাক্তের পরই আসামি গ্রেপ্তারেরও আশ্বাস দেন তিনি। তবে এ ঘটনায় যাতে কোন নিরীহ লোক হয়রানি না হন; সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
ওদিকে সুলতানা পারভীনের মৃত্যুর ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে অপমৃত্যুর মামলার বাদি মেলান্দহ হাসপাতালের স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফজলুল হক জানান-গণমানুষের গাইনী ডাক্তার খ্যাত সুলতানা পারভীনের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না। এই মৃত্যুর অন্তরালে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছেন।
সুলতানা পারভীনের পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আজাদ, বোন মেরিনা পারভীন এবং ভগ্নিপতি আসাদুল হাফিজ চৌধুরী ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় জামালপুর প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানে তারা সুলতানা পারভীনকে হত্যার কথা বলেছেন। পরদিন ২২ আগস্ট স্বাস্থ ও পরিবার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নিলুফার নাজনীন মেলান্দহ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। সুলতানা পারভীনের বাবা নিলুফার নাজনীনের কাছেও তার মেয়েকে হত্যার অভিযোগ করেন। লাশের চোখে-মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন থাকার কথাও বলেছেন। সুলতানার মোবাইলে হত্যার হুমকী-এসএমএস’র সূত্রধরে অনুসন্ধান করলে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসবে। এমন দাবি সুলতানার পিতা আলাউদ্দিন আজাদের।
উল্লেখ্য, ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় ডা. সুলতানা পারভীনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ডা. সুলতানা পারভীনের কক্ষের ভিতর দিয়ে দরজার ছিটকেরি লাগানো ছিল। সেই কক্ষে অন্য কোন লোকজনও ছিল না। এমনকি সেই কক্ষে কোন লোক প্রবেশেরও সুযোগ নেই। লাশের পাশে ৫টি প্যাথেডিনের ভায়ালও উদ্ধার করেছে পুলিশ।