শিরোনাম
ত্রিশালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভা ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র পদে আমিন সরকারের বিজয় চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সোহেল গ্রেফতার ময়মনসিংহে ২ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার জাককানইবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফাহাদ, সম্পাদক আসলাম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি আজ সন্ধ্যা ৭টায় সিইসির ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আফ্রিকার প্রাণী নীলগাই, জেব্রা ও কমনইল্যান্ড পরিবারে যুক্ত হলো পাঁচ নতুন ত্রিশালের সাখুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রিফাত ও সম্পাদক রিজন জয়পুরহাটের কালাইয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালিত

গফরগাঁও পৌরসভার নতুন মেয়র ঘোষণা

মোঃ মনির হোসেন
  • আপডেট বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১৯৬ দেখেছে
ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌরসভার মেয়রের পদ নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। বেশ কয়েক দিন যাবত পৌর সভার প্যানেল মেয়র-১ শাহজাহান সাজু মেয়র ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) সয়লাভ। এই নিয়ে ফেসবুকে পক্ষে বিপক্ষে চলছে তুমুল সমালোচনা। তবে, মেয়র এসএম ইকবাল হোসেন সুমনের অভিযোগ স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের নির্দেশে যুবলীগ-ছাত্রলীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসব কাজ করে আসছেন।
জানা যায়, চলতি বছরের ২৭ মার্চ গফরগাঁও পৌর সভার এসএম ইকবার হোসেন সুমনের জন্মদিন পালিত হয়। ওই জন্মদিনে ফ্রান্স প্রবাসী মেয়রের বন্ধু ইনসাফ সুমন ভুইয়া নামে একজন জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। ওই ফেসবুক পোষ্টে ইনসাফ সুমন ভুইয়া লিখেন, “শুভ জন্মদিন বন্ধু এসএম ইকবাল হোসেন মেয়র, গফরগাঁও পৌরসভা, ভবিষ্যতে তোমাকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই।” ওই পোষ্টে মেয়র সুমন ধন্যবাদ জানিয়ে কমেন্ট করেন।
এরপর থেকেই মেয়র ও অনুসারীদের উপর নির্যাতন শুরু হয়। এই ঘটনায় পর থেকে মেয়র সুমন ও অনুসারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর গত রোজার ঈদের দিন ২২ এপ্রিল মেয়র ইকবাল হোসেন সুমন ও তার অনুসারীরা এলাকায় এসে নামাজ পড়তে যায়। এমপি সমর্থকরা এমন খবর মেয়র হোসেন সুমন ও তার অনুসারীদের উপর হামলা তাদের বাড়ি ঘর ভাংচুর করে।
এই ঘটনার পর থেকে আবারও মেয়র সুমন ও তার অনুসারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এবং গফরগাঁওয়ে আসলে মেয়র সুমনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
এই ঘটনার পর গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে গফরগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় পৌর সভার প্যানেল মেয়র-১ শাহজাহান সাজুর জন্মদিন পালিত হয়।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গফরগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, জেলা পরিষদের সদস্য দেলোয়ার হোসেন রিপন, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন পলাশ, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদ হাসান সজীব, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সানীল, সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম মন্ডলসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে স্বঘোষিত মেয়র শাহজাহান সাজু কেক কাটার সাথে নেতাকর্মীরা শ্লোগান দিতে থাকেন। শ্লোগানে বলা হয়, শুভ শুভ শুভ দিন মেয়র সাহেবের জন্মদিন।
এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) স্থানীয়রা শাহজাহান সাজুকে গফরগাঁও পৌর মেয়র সম্ভোধন করে পোষ্ট দিতে থাকেন। অনেকেই ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসনের সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেলের সাথে দাড়ানো শাহজাহান সাজু’র ছবি পোষ্ট করে হিসাবে সম্ভোধন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।
এম সালাউদ্দিন পলাশ নামে ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেন, শুভ জন্মদিন, শাহজাহান সাজু ভাই মেয়র, গফরগাঁও পৌরসভা।
শাহরীয়ার বাপ্পী নামে আরেকজন লিখেন, শুভ জন্মদিন শাহজাহান সাজু কাকা, মেয়র গফরগাঁও পৌরসভা, জন্মদিনে শুভেচ্ছা রইলো।
মেহরাব হোসাইন তানভীর লিখেন, শুভ জন্মদিন সাজু মামা, মেয়র গফরগাঁও পৌরসভা, ময়মনসিংহ। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
যুবলীগ নেতা তাজমুন নামে একজন লিখেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার আশীর্বাদ নিয়ে দুই দুইবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কা নিয়ে মেয়র পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবধি মেয়র পদে বহাল রয়েছেন এসএম ইকবাল হোসেন সুমন। তিনি ২০১৬ থেকে ২০২১ ও এবং ২০২১ সাল থেকে এখনো চলমান।
দুঃখজনক হলেও সত্যিটা বলতেই হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বরাত দিয়ে দেখতে পেলাম কিছু দায়ীত্বশীল পাগল বর্তমান ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহজাহান সাজু নামে একজনকে মেয়র উল্লেখ করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট দিয়ে সয়লাব করেছেন ফেইসবুকের ওয়াল। ক্ষমা করবেন পাগল বলায় বলেছি কারন পাগল বা উম্মাদ ছাড়া একটা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের পদ পাল্টে দিতে পারে না।
জন্মদিনে উপস্থিত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সানীলের কাছে শাহজাহান সাজুর জন্মদিনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি বলেন, আমার নাম্বারে আরেকটি কল আসছে বলে লাইন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন দিলে সেটি বন্ধ দেখায়।
জন্মদিনে উপস্থিত উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন পলাশের নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা পরিষদ সদস্য দেলোয়ার হোসেন রিপন জাগো নিউজকে বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর শাহজাহান সাজুর জন্মদিন পালন করা হয়েছে। সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম। তবে, তিনি মেয়র না, প্যানেল মেয়র-১। যেহেতু মেয়র ইকবাল হোসেন সুমন আসেনা বলেই তাকে সবাই মেয়র বলে সম্ভোধন করে। ওই দিন রাতে যা হয়েছে, পরে আমরা আলোচনা করে বুজতে পেরেছিল। সেটি ভুল ছিল। আমি আজই আপনার সাথে দেখা করবো বলে লাইন কেটে দেন।
এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ওই দিন মেয়র শাহজাহান সাজুর জন্মদিন পালন করেছি। কিন্তু, তিনি মেয়র কিভাবে হলেন জানতে চাইলে তিনি লাইন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার তার নাম্বারে ফোন করলে সেটি বন্ধ দেখায়।
এবিষয়ে গফরগাঁও পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ শাহজাহান সাজু  বলেন, ওই দিন আমার জন্মদিন ছিল। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা আমাকে খবর দিয়ে আওয়ামীলীগের অফিসে নিয়ে জন্মদিন পালন করেছেন। সেখানে ছাত্রলীগ যুবলীগ আমাকে মেয়র মেয়র বলে শ্লোগান দিয়েছে আমাকে মেয়র বলে ঘোষণা দিয়েছে। এর চাইতে বেশি কিছু আমার জানা নেই।
মেয়র এসএম ইকবাল হোসেন সুমন বলেন, একটি ফেসবুক পোষ্টে কমেন্ট করার জন্য এমপি সাহেব ও তার সমর্থকদের নির্যাতনের কারণে এপ্রিল মাস থেকে আমি গফরগাঁও আসতে পারিনা। জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা প্রতিক নিয়ে দুইবার গফরগাঁও পৌর সভার মেয়র হয়েছি। বর্তমানেও আমি মেয়র। আমি প্রধানমন্ত্রীর নৌকা প্রতিক নিয়ে মেয়র হয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে এমপি সাহেবের নির্দেশে স্থানীয় আওয়ামীল, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একজনকে মেয়র হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রাণ ভয়ে গফরগাঁও যেতে পারি না। এমনকি আমার অনেক সমর্থকরাও বাড়ি ছাড়া। গফরগাঁও আসলে আমাকে মারধর এমনকি হত্যার হুমকিও দেয়া হচ্ছে। যে কারণে আমি ঢাকায় ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অফিসিয়াল কাজ করে আসছি।
এবিষয়ে জানতে ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসনের সংদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেলের নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেনি। এছাড়াও তার নাম্বারে একাধিক এসএমএস করার পরেও তিনি কোন সাড়া দেননি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সংক্রান্ত আরও খবর

ফেইসবুক পেজ

error: Content is protected !!