শিরোনাম
ত্রিশালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভা ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র পদে আমিন সরকারের বিজয় চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সোহেল গ্রেফতার ময়মনসিংহে ২ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার জাককানইবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফাহাদ, সম্পাদক আসলাম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি আজ সন্ধ্যা ৭টায় সিইসির ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আফ্রিকার প্রাণী নীলগাই, জেব্রা ও কমনইল্যান্ড পরিবারে যুক্ত হলো পাঁচ নতুন ত্রিশালের সাখুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রিফাত ও সম্পাদক রিজন জয়পুরহাটের কালাইয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালিত

গফরগাঁও ফেসবুক পোস্ট ঘিরে তুলকালাম, এলাকা ছাড়া মেয়র

মোঃ ম‌নির হো‌সেন
  • আপডেট শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১৩৫ দেখেছে
ভবিষ্যতে তোমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌরসভার মেয়রকে নিয়ে তাঁর বন্ধুর এমন এক ফেইসবুক পোস্টে তুলকালাম চলছে। এনিয়ে প্রাণনাশের ভয়ে গত ছ’মাস ধরে গফরগাঁও যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ মেয়র ইকবাল হোসেন সুমন ও তাঁর অনুসারীদের। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ও তাঁর অনুসারীদের দাবি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মেয়রকে অনাস্থা দেওয়ায় গফরগাঁওয়ে ভয়ে আসছে না।
২৭ মার্চ গফরগাঁও পৌরসভার মেয়র এসএম ইকবাল হোসেন সুমনের জন্মদিনে ফেইসবুকে ভবিষ্যতে তোমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই এমন একটি পোস্ট করেন তাঁর ফ্রান্স প্রবাসী বন্ধু ইনসাফ সুমন ভূঁইয়া। ওই পোস্টে মেয়র ধন্যবাদ জানিয়ে কমেন্ট করেন। এঘটনার পর থেকে সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দেয় স্থানীয় সংসদ সদস্য বাবেল ও মেয়র সুমনের মধ্যে। মেয়র ও তাঁর অনুসারীদের অভিযোগ এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমপির অনুসারীরা তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা করলে প্রাণনাশের ভয়ে ঈদুল ফিতরের দিন গফরগাঁও ছাড়তে বাধ্য হন।
গফরগাঁও পৌরসভার মেয়র এসএম ইকবাল হোসেন সুমন বলেন, ২৭ মার্চ আমার জন্মদিন। ওই আমার প্রিয়জনেরা আমাকে নানা ভাবে উইশ করেন। এবার জন্মদিনে মাননীয় সংসদ সদস্যের সাথে জন্মদিনে সৌদী আরব অবস্থান করছিলাম। সেসময় আমার ফ্রান্স প্রবাসী বন্ধু ইনসাফ সুমন ভূঁইয়া তাঁর ফেইসবুকে ভবিষ্যতে তোমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই এমন পোস্ট করেন। আমি পোস্টটি পুরোপুরি না দেখে তাকে ধন্যবাদ জানাই। যা আমার জীবনের জন্য কাল হলো। এবিষয়ে এমপি সাহেবের কাছে ক্ষমাও চেয়েছি। কারণ তিনি আমার অভিভাবক। তাঁর পরেও আগামী নির্বাচনে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী হবো সেটা ভেবে এমপি প্রথমে সমস্ত বাজারের ইজারা তোলা বন্ধ করে দেয়। পরে আমার অফিসে তাঁর লোকজন পাঠিয়ে হুমকী দেয়। ঈদুল ফিতরের নামাজের পর আমার অনুসারীদের বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘরে হামলা করা হয়। পরে প্রাণ নাশের ভয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হই। তারপরেও এমপির অনুসারীদের হুমকী থেমে নেই। ওইদিন প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও পাইনি। এখন তারা প্যানেল মেয়র শাহজাহান সাজুকে অগণতান্ত্রিক ভাবে মেয়র বানিয়ে আমার রুমে বসিয়ে পৌরসভা পরিচালনা করছে। নৌকা নিয়ে মেয়র হয়ে সাড়ে সাত বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছি। এমন দিন দেখতে হবে তা কখনও ভাবেনি। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবগত রয়েছেন। আশা করছি তিনি একটি সুন্দর সমাধান দেবেন।
৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাবুল হোসেন বলেন, মেয়রকে এলাকা ছাড়া করার পর আমাকে ফোন করে বলা হয় অনাস্থা দিতে। এতে আমি রাজি না হওয়ায় আমার বাসাতে এমপির অনুসারীরা হামলা করে। যা সিসি টিভির ফুটেজে দৃশ্যমান। আমি এখন আমার পরিবার নিয়ে প্রাণ নাশের ভয়ে ময়মনসিংহ শহরে যাযাবরের মতো জীবন যাপন করছি।
পৌর যুবলীগের সদস্য তাজমুন আহম্মেদ বলেন, আমি মেয়রের কাছের লোক হওয়ায় মাননীয় সংসদ সদস্যের অনুসারীরা প্রথমে আমার ব্যবসা বাণিজ্যের উপর আঘাত হানে। তারা আমাকে জিম্মি করে আমার ইটভাটা লিখে নেয়। প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করি। বাড়ি-ঘর ছেড়ে গত ছ’মাস ধরে কয়েক’শ নেতাকর্মী অন্যত্র বসবাস করছি। এরপরেও পুলিশী হয়রানীর চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের অনুসারী গফরগাঁও পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহজাহান সাজু বলেন, মেয়র নিজের দুর্নীতি ঢাকতে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের রোষানলে পরবে বলে এলাকায় আসছেন না।
মেয়র সম্বোধন করে জন্মদিনের কেক কাটার বিষয়ে শাহজাহান সাজু বলেন, দুই টার্ম ধরে আমি প্যানেল মেয়র। তাই সবাই আমাকে মেয়র হিসেবে জানে। এবং জন্মদিনে মেয়র বলে সম্বোধন করেছে।
এসব বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল বলেন, ফেইসবুক পোস্টকে ঘিরে মেয়রের সঙ্গে কোন ধরণের মতবিরোধ হয়নি। সে মেয়রের দায়িত্বপালনের শুরু থেকে নানা অনিয়ম করে আসছে। তাই সকল কাউন্সিলরগণ তাকে অনাস্থা দিয়েছে। সেই ভয়ে সে গফরগাঁও ছাড়া। কেউ তো তাকে গফরগাঁও আসতে বারণ করেনি। কারো বাড়িতে কোন ধরণের হামলা হলে পুলিশ অন্তত জানত। তারা আইনের সহযোগিতা নিতে পারত।
উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো.মোস্তাফিজার রহমান বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি তদন্তের জন্য আমাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ হলেই সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সংক্রান্ত আরও খবর

ফেইসবুক পেজ

error: Content is protected !!