রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ত্রিশালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভা ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র পদে আমিন সরকারের বিজয় চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সোহেল গ্রেফতার ময়মনসিংহে ২ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার জাককানইবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফাহাদ, সম্পাদক আসলাম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি আজ সন্ধ্যা ৭টায় সিইসির ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আফ্রিকার প্রাণী নীলগাই, জেব্রা ও কমনইল্যান্ড পরিবারে যুক্ত হলো পাঁচ নতুন ত্রিশালের সাখুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রিফাত ও সম্পাদক রিজন জয়পুরহাটের কালাইয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালিত

টাঙ্গাইলে ৬০ ভাগ তাঁতকল বন্ধ, নেই শাড়ি তৈরির ধুম

আমিনুল ইসলাম, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) থেকে
  • আপডেট বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২
  • ১৯১ দেখেছে

করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠলেও টাঙ্গাইলে তাঁত শিল্পে মন্দা কাটেনি। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, পুঁজি সংকট ও আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় চরম সংকটে পড়েছে এই শিল্পে জড়িত শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।

এদিকে অর্থসংকট ও লোকসানের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ৬০ ভাগ তাঁতকল। এসব তাঁতকলের কারিগররা ভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছেন। তবে তাঁত শিল্পের সুদিন ফিরিয়ে আনা ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছে জেলা তাঁত বোর্ড কর্মকর্তা।

সরেজমিনে জেলার বিখ্যাত তাঁতপল্লী পাথরাইলে দেখা গেছে, তাঁত ঘরে খট খট শব্দ হচ্ছে। সেখানে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন দামের তাঁতের শাড়ি। কারিগররা নিখুঁতভাবে তৈরি করছে শাড়ি। তবে ঘরের অধিকাংশ তাঁতকল বন্ধ রয়েছে। কারণ শাড়ির চাহিদা তেমন নেই। আবার চাহিদা থাকলেও অর্থ সংকটে কারিগরদের কাজ দিচ্ছে না তাঁত মালিকরা।

জানা গেছে, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার, কালিহাতীর বল্লাসহ জেলায় কাগজে-কলমে প্রায় ৩৫ হাজার তাঁত রয়েছে। এতে ১ লাখ ৩ হাজার ২০৬ জন তাঁত শ্রমিক জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন শাড়ি তৈরির কাজ করে। কিন্তু করোনার কারণে লোকসানের পাশাপাশি আর্থিক সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে বহু তাঁত কারখানা। এক দিকে শাড়ি তৈরিতে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি ও ঋণের বোঝা, অপর দিকে শ্রমিক সংকট থাকায় ঠিকমতো শাড়ি তৈরি করতে পারছেন না তারা। লোকসানের মুখে অধিকাংশ তাঁত বন্ধ থাকায় এবারের ঈদ উপলক্ষে জেলায় নেই শাড়ি তৈরির ধুম। তাঁতপল্লিগুলোতে নেই সেই খট খট শব্দ। তাঁতের শাড়ির চাহিদা কমে যাওয়া ও ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে পথে বসেছেন অনেকেই।

তাঁত শ্রমিক বাছেদ আলী শেখ বলেন, একটা শাড়ি তৈরিতে দেড় থেকে দুই দিন সময় লাগে। সেই অনুযায়ী মজুরি পাওয়া যায় না। পরিশ্রম করি পরিবার-পরিজনের জন্য, কিন্তু সঠিক পারিশ্রমিক পাই না। অন্য কোনো পেশার অভিজ্ঞতা না থাকায় বাধ্য হয়েই এই পেশায় আছি।

তাঁত শ্রমিক শাহাদত বলেন, আগে একটা শাড়ি তৈরিতে ১২০০ টাকা দিত। বর্তমানে সেই শাড়ি বানাতে মালিকরা দিচ্ছে ৮০০ টাকা। মজুরি কম দিলেও ঠিকমতো কাজ দেওয়া হয় না। ঈদ আসলে মহাজনরা কিছু কাজ দেয়।

তাঁত শ্রমিকরা বলেন, করোনার সময় তাঁতপল্লি পুরোটাই বন্ধ ছিল। তখন গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ভিন্ন পেশায় জীবিকা নির্বাহ করেছি। সে সময় তাঁত শ্রমিকদের কোনো সহায়তা দেওয়া হয়নি। ঈদকে সামনে রেখে মাস খানেক আগে কাজে ফেরা হয়েছে। বেচাকেনা তেমন ভালো না, তাই কাজও কম দিচ্ছে মালিকরা। কাজ কম হলেও খুশি। কারণ কাজের এই টাকায় পরিবার নিয়ে ঈদ করতে পারব।

টাঙ্গাইলের শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক বলেন, করোনার আগে ঈদগুলোতে যে আনন্দ ছিল, সেই আনন্দ এখন আর নেই। করোনার পর এ বছর সেই আনন্দ ফিরে আসবে এমন ধারণা ছিল। কিন্তু এবার ঈদে উৎসাহ নেই। আগে তাঁতের শাড়ির জন্য যেভাবে তাঁতি বাড়ি দৌড়াতাম, এখন সেই আনন্দ নেই। শাড়ি পাইকারি বিক্রি হয়েছে ঠিকই কিন্তু খুচরা পর্যায়ে যদি সেই শাড়িগুলো বিক্রি হয়, তাহলে বোঝা যাবে শাড়ির বাজার মোটামুটি আছে।

তিনি আরও বলেন, তাঁত শিল্প দিন দিন লোকসানের পথে যাচ্ছে। জেলায় ৬০ ভাগ তাঁত বন্ধ হওয়ায় উৎপাদন কমে গেছে। শাড়ি তৈরির কাঁচামালের দাম বৃদ্ধিসহ অনেক ব্যবসায়ী লোকসানে পড়ে সর্বশান্ত হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড টাঙ্গাইলের লিয়াজোঁ অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, লোকসানের মুখে তাঁত পেশাটি ছেড়ে দেওয়াদের ফিরিয়ে আনতে বড় ধরনের ঋণ সুবিধার জন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। দ্রুত এই শিল্প পুনরুদ্ধারে কাজ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সংক্রান্ত আরও খবর
© এই ওয়েবসাইটের  লেখা, ছবি ও ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি © Developing By :  ESAITBD Software Lab
ESAITBD Sof-Lab UAE/BD