শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ত্রিশালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভা ত্রিশাল পৌরসভার মেয়র পদে আমিন সরকারের বিজয় চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সোহেল গ্রেফতার ময়মনসিংহে ২ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার জাককানইবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ফাহাদ, সম্পাদক আসলাম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি আজ সন্ধ্যা ৭টায় সিইসির ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আফ্রিকার প্রাণী নীলগাই, জেব্রা ও কমনইল্যান্ড পরিবারে যুক্ত হলো পাঁচ নতুন ত্রিশালের সাখুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রিফাত ও সম্পাদক রিজন জয়পুরহাটের কালাইয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন পালিত

সাংবাদিকের কন্ঠরোধে সাজানো মামলা !

Reporter Name
  • আপডেট রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০
  • ২৭৮ দেখেছে

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ নিহতের পর ওসি প্রদীপ কুমার দাশের অপরাধের অনেক তথ্য প্রকাশ হচ্ছে । সাবেক ওসি প্রদীপের সাজানো মামলায় দীর্ঘ ১১ মাস ৫ দিন কারাভোগ করেছেন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা। কারামুক্তির পর এই সাংবাদিক গণমাধ্যমে বলেছেন, বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ ছিল না। আমি দুই দশক ধরে সাংবাদিকতা করছি। তার আগে আরো অনেকে টেকনাফের ওসি ছিল। সবার সঙ্গেই পেশাগত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। ওসি প্রদীপ কুমার দাস দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মাদক নির্মূলের নামে নিজেই বেপরোয়া মাদক সেবন, মাদকের ব্যবসা করেছে, মানুষকে মিথ্যা মাদকের মামলায় ফাঁসিয়েছে, টাকা না দিলে ক্রসফায়ার দিয়েছে। এলাকার নিরীহ মা-বোনদের সম্ভ্রমহানি করেছে, ভিটেবাড়ি উচ্ছেদ করেছে। বড় বড় অপরাধীদের অপরাধকে ছোট দেখানোর জন্য লাখ লাখ অর্থেও লেনদেন করেছেন আবার টাকা না পেলে ছোট অপরাধকে বড় করে মামলা দায়ের করেছেন। উপরোক্ত বিষয় এবং ২০১৯ সালের ২৪ জুন ‘টাকা না দিলে বন্দুকযুদ্ধ দেন টেকনাফের ওসি’ শিরোনামে একটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করেছিলাম। এটাই আমার জীবনের কাল হয়ে যায়।ফরিদুলের নামে করা হয় অস্ত্র মাদকসহ সাজানো ৬টি মামলা ।
দেশে এমন আরো পুলিশ অফিসার আছেন পেশাদার সাংবাদিকদের হয়রানি করেছে । আছেন রাজনৈতিক দলের নেতা- কর্মীও । যাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের সাংবাদিকরা ঝুঁকিতে ফেলেছেন । এসব লোকদের কারণে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক ঐ সব স্থানীয় অঞ্চল ।

এসব দুষ্ট পুলিশ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতাদের সাজানো মামলা, হামলা নির্যাতন তথা সাংবাদিকদের উপর আক্রমণগুলি মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং তথ্যে অ্যাক্সেসকে অত্যন্ত কঠিন করে তুলেছে। সারাদেশেই গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের উপর এমন অসংখ্য সাজানো মামলা হামলা নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে । এসব অমানবিক ঘটনার সত্যতা প্রমাণ হলেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে এমন দৃষ্টান্ত খুব একটা নেই। ওসি নির্যাতনের বর্ণনায় ফরিদুল মোস্তফা বলেন, প্রদীপের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে। আমার চোখ মুখ বেঁধে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। ওসি প্রদীপও আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পরে। এসময় তারা আমার দুচেখে মরিচের গুড়া দেয় পাশাপাশি পিন দিয়ে চোখ নষ্ট করার চেষ্টা চালায়। প্লাস দিয়ে নখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা চালায়। হাতে পায়ে এবং মুখে দীর্ঘ সময় মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে আমি পানি পানি করে চিল্লাতে লাগলাম, তখন ওসি প্রদীপ প্যান্টের চেন খুলে পস্রাব এবং বাথরুমের মলমূত্র আমার মুখে লাগিয়ে দেয়। এরপর আধামরা অবস্থায়, আমাকে কয়েকজন মিলে ধরে টেকনাফ মডেল থানার তিন তলায় ঝুলিয়ে রাখা হয়। এথেকে করো বুঝতে বাকী থাকার কথা নয় যে, সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার কণ্ঠরোধ করার জন্যই এই মামলা ও হামলা নির্যাতনের ঘটনা ঘটানো হয় ।

ফরিদুলের মত অনেক সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও মত প্রকাশে নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে ওসি প্রদীপের মত দুষ্টদের মত । এদের কারণে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিধি সংকীর্ণ হচ্ছে । ওসি প্রদীপ সৃষ্ট এহেন পরিস্থিতিটির দায়বদ্ধতা কোনও একক ব্যক্তির নয়, ওসি প্রদীপের উল্টো রোষানলে কারণে যেখানে নিগৃহীন হতে হয়, সেখানে কীভাবে সাংবাদিকরা কাজ করবে? সাংবাদিকরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ,সাংস্কৃতিক ও অপরাধ পরিস্থিতি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করেন । অথচ সুরক্ষার ক্ষেত্রে তারা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন । সাংবাদিকদের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে ।

এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে কোন্ সাংবাদিক অপরাধের সংবাদ প্রকাশ করিতে সাহস করবে? বড় বিস্ময় লাগে! যারা সাহসিকতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন সেই সাংবাদিককে জেলবন্দি হতে হয় । সত্যভাষীকে ‘অপরাধী’ বলিয়া দাগাইয়া সত্যভাষণের কাজটিকেই ‘অপরাধ’ করিয়া তুলিবার জন্য সাজানো মামলা দায়ের করা হয়। এতে সত্যবাদীতা বিপন্ন।

পৃথিবীতে অনেক দেশেই সাংবাদিকের নিরাপত্তা নেই । এখনও সময় আছে এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সরব হতে হবে । সাংবাদিককে ভয় দেখিয়ে চুপ করার সহজ কাজ আর নেই । তবে বিশ্বে ইদানীং সাংবাদিকের প্রতি যে যূথবদ্ধ হিংসা ঘটছে, তা অভূতপূর্ব। এই কারণেই সংগঠিত প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রয়োজন। সাংবাদিকদের সমবেত প্রতিবাদে অল্পদিনেই পিছু হটবে অন্যায়কারী এটা আমার বিশ্বাস ।

লেখক-
খায়রুল আলম রফিক 
সভাপতি,
বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ (বনেক),
কেন্দ্রীয় পরিষদ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সংক্রান্ত আরও খবর
© এই ওয়েবসাইটের  লেখা, ছবি ও ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি © Developing By :  ESAITBD Software Lab
ESAITBD Sof-Lab UAE/BD