সুনামগঞ্জে ১৫ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় ভয়াবহ বন্যা, বিপাকে লক্ষ লক্ষ মানুষ

এম এ মান্নান, মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) থে‌কে
  • আপডেট শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০২২
  • ১৫৭ দেখেছে

সুনামগঞ্জে আবারো ১৫ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত শহরের ঘোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার অতিক্রম করে ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১৮৫ মিলিমিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে ২২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায়, জেলা শহরের সাথে বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর,ছাতক এবং দোয়ারাবাজারের সড়ক যোগাযোগ গত তিনদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। অবিরাম বৃষ্টি থাকায় বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে রয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।

এদিকে সুরমা নদীর, কুশিয়ারা,যাদুকাটা,বৌলাই নদী সহ নদনদীর পানি বাড়ছে। বিপাকে পড়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। সুনামগঞ্জ শহরের নবীননগর, ওয়েজখালী, হাছননগর, কাজির পয়েন্ট,ঘোলঘর পূর্ব নতুনপাড়া ও শান্তিবাগ এবং সুলতানপুরে রাস্তাঘাট সহ বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। জেলার তাহিরপুর, দোয়ারা, বিশ্বম্বরপুর, জামালগঞ্জ সহ ছাতক উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছন্ন রয়েছে। টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতি সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানিবন্দি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।

এদিকে, ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, সদর ও দিরাই, শাল্লা, ধর্মপাশা, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ এবং শান্তিগঞ্জের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল এলাকায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বহু পাকা ও কাঁচা রাস্তাঘাট। প্লাবিত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি, দুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শতাধিক মৎস্য খামার। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এখানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ছাতক, দোয়ারা ও সদর উপজেলায় মোট ৫০ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং এখ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার মানুষকে আশ্রকেন্দ্রে নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন জেলায় ১২ হাজার ৮শত হেক্টর আউশ ধানের মধ্যে ১৩০ হেক্টর ধান ও ২ হাজার ৮ শত হেক্টর নবজির মধ্যে ১৩০ হেক্টর বন্যার পানিতে নিমর্জ্জিত হয়েছে । যার ক্ষতির পরিমান হবে ৫০ লাখ টাকা।

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জাান যায় দ্বিতীয় দফার বন্যায় জেলায় ৪ শত পুকুর ডুবে এককোটি পোনা ও তিনশত টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমান ১৫ কোটি টাকা হবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে জেলার ৪ টি পৌরসভা ও ১২ টি উপজেলায় ৩২০ মেট্রিক টন জি আর এর চাল বিতরন,নগদ ৯ লাখ টাকা ও বিশুদ্ধ পানীয় ট্যাবলেট সহ শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করে বিতরণ করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই সংক্রান্ত আরও খবর

ফেইসবুক পেজ

error: Content is protected !!