গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ইউসুফ জামিল নামের এক জামাতা নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজের একমাস অতিবাহিত হলেও তাঁর কোন সন্ধান মিলেনি। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ স্ত্রী তামান্না আক্তার ও তাঁর পরিবার পরিকল্পিত ভাবে ইউসুফ জামিলকে অপহরণ করে হত্যা করে লাশ গুম করে রেখেছে। তবে গফরগাও থানাপুলিশ আসামীদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও অপহরণের সাথে জড়িত নয় বলে জানান আসামীরা।
গত ২রা আগষ্ট ত্রিশাল উপজেলার বীররামপুর চরপড়া গ্রাম থেকে স্ত্রী তামান্না আক্তারকে নিয়ে গফরগাঁও কদম রসুলপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যায় জামাতা ইউসুফ জামিল। পরের দিন মুঠোফোনে তাঁর পরিবারকে নিখোঁজের খবর জানান শ্বাশুরি আছমা খাতুন। আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে ছেলের সন্ধান না পেয়ে ৪ঠা আগস্ট মা রাশিদা বেগম গফরগাঁও থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে বলে। সাধারণ ডায়েরি করার একমাস অতিবাহিত হলে ছেলের সন্ধান না পাওয়ায় ইউসুফ জামিলের মা রাশিদা বেগম গত ১৮ই আগষ্ট ময়মনসিংহ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অপহরণের অভিযোগে স্ত্রী তামান্না আক্তার, তাঁর পিতা এনামুল হক ও মাতা আছমা খাতুনকে আসামী করে মামলা করেন। মযমনসিংহ বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মামলাটি গফরগাঁও থানার ওসিকে রুজু করার নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে গফরগাও থানা পুলিশ মামলাটি এজাহারভুক্ত করে স্ত্রী তামান্না, তার পিতা এনামুল ও মাতা আছমা খাতুনকে গ্রেফতার করে দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
মামলা এজাহার ও পরিবারের সাথে কথা বলে জানাগেছে, ত্রিশাল উপজেলার মৃত ফজলুল হকের পুত্র ইউসুফ জামিলের সাথে গফরগাঁও উপজেলার কদম রসুলপুর গ্রামের এনামুল হকের কন্যা তামান্না আক্তারের সাথে গত মার্চ মাসে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায় সময়ই আরিফ নামের এক ছেলের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলতো তামান্না আক্তার। যে কারনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মধ্যেই ঝগড়া হত। বিয়ের পর অন্য ছেলের সাথে মোবাইলে কথা বলা নিয়ে ঝগড়া বিবাদের ঘটনা উভয় পরিবার জানতেন। গত ০২রা আগষ্ট বিকালে স্ত্রী তামান্না আক্তার ত্রিশাল বীর রামপুর চরপড়া গ্রাম থেকে স্বামীকে নিয়ে তাঁর পিত্রালয় গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুর গ্রামে যায়। পরের দিন শশুর বাড়ি থেকে তামান্না মা ইউসুফ জামিলের মা রাশিদা খাতুনকে মুঠোফোনে জানান, তাঁর ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা,তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ। বাড়ি থেকে না বলে কোথায় চলে গেছে তারা জানেননা।
ইউসুফ জামিলে মা রাশিদা খাতুন বলেন, ছেলের শ্বশুড় বাড়ির লোকজন স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী, পুলিশ মামলা নেয়নি, আদালতে মামলা করেছি। ভয়ে এখন থানায় খোঁজ খবর নিতে পারেনা, স্ত্রী ও তাঁর পরিবার কৌশলে অপহরণ ও খুন করে লাশ গুম করেছে, তা না হলে একমাসেও কেন আমার ছেলের সন্ধান পাওয়া যাবে না।
তামান্না আক্তারের মা আছমা খাতুন বলেন, মেয়েকে জামাই বেরাতে আসার পরদিন সকালে ঔষধ কেনার কথা বলে আমাদের বাড়ির পাশে চারআনি বাজারে যায়। এরপর আর ফিরে আসেনি। মোবাইলে ফোন দেয়ার পর তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোজাখোজি করেও আমরা তাকে পায়নি। এ ব্যপারে গফরগাও থানায় সাধারন ডায়েরী করেছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই ছিদ্দিক জানান, এ ব্যাপারে দুই পরিবারই থানায় দুটি জিডি করার পর স্বামী ইউসুফের মা বাদী হয়ে আদালতে মামলা করলে গত ১লা সেপ্টেম্বর তা এজাহারভুক্ত হয়। এ মামলার তিন আসামীকে গ্রেফতার করার পর দুদিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও অপরহরনের ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে আসামীরা জানান। তবে মামলার তদন্ত কাজ অব্যহত আছে আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বামীকে খোজে বের করতে পারব।