ময়মনসিংহের ত্রিশালে বইতে শুরু করেছে পৌর নির্বাচনের হাওয়া। ভোটযুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। ইতিমধ্যে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে হিসাব-নিকাশ শুরু করেছেন প্রধান দল আওয়ামী লীগ। একক প্রার্থী নিয়ে ভোটযুদ্ধে নামার প্রস্তুতি তাদের। তবে দলের অভ্যন্তরে বিদ্রোহ দমাতে এখন থেকেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে শাসক দল আওয়ামী লীগ।
ময়মনসিংহের আ.লীগের নেতারা জানিয়েছেন, ক্ষোভ-বিক্ষোভ কমিয়ে তারা বিজয়ের স্বার্থে একক প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে দলের অভ্যন্তরে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করবেন।
ত্রিশালে পৌরসভার মধ্যে আগামী ৩০শে জানুয়ারি নির্বাচন হতে পারে। এ কারণে পৌরসভায় নির্বাচনী তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এখনো পৌরসভার সীমানা নির্ধারণ ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়নি। এসব কাজ চূড়ান্ত হওয়ার পর পৌরসভার নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। ত্রিশাল পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন। প্রতিদিনই তারা বিভিন্ন এলাকায় মতবিনিময় করে যাচ্ছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন- দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও এলাকাভিত্তিক মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই প্রার্থীরা মাঠে নামছেন। এরপর তারা রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে দলীয় প্রতীকের জন্য লড়াই চালাবেন।
ত্রিশাল পৌরসভায় গ্রামীণ রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, বাজারের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে বর্তমান মেয়র এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ ও কাউন্সিলররা আন্তরিক ছিলেন। এই উন্নয়নের ধারবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে খুব দ্রুত ত্রিশাল উন্নত আধুনিক শহরে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন পৌরসভার কাউন্সিলরা। তারা জানান- ত্রিশাল পৌরসভার অবহেলিত এলাকাগুলো উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে। চলমান প্রক্রিয়া ধরে রাখতে পারলে অচিরেই ত্রিশাল পরিণত হবে একটি উন্নত পৌরসভায়। আসন্ন ত্রিশাল পৌরসভায় ইতিমধ্যে একাধিক আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। তারা চষে বেড়াচ্ছেন পৌর এলাকা। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- ময়মনসিংহ জেলা আ.লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও রামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ সরকার, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, আ.লীগ নেতা মো. রুকন উদ্দিন খোকন, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম আহবায়ক আশরাফুল ইসলাম মন্ডল, সাবেক যুবলীগ নেতা ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক মো. কামাল হোসেন ও ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান মাহমুদ। নৌকার মনোনয়ন পেতে দলের ভেতরে তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতা গড়ে তুলেছেন।
এদিকে বর্তমান মেয়র ও দুইবারের সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এবিএম আনিছুজ্জামান আনিছ জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছেন বলে জানিয়েছন পৌর এলাকার ভোটারগণ। তবে পৌর ভোটারদের চাপে এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন। পৌরসভার নির্বাচন আগামী ৩০শে জানুয়ারি। ইতিমধ্যে এ পৌরসভার মেয়র আনিছুজ্জামান আনিছ প্রচারনায় মাঠে নেমেছেন। প্রায় প্রতিদিনই তিনি পৌরসভায় পাড়া মহল্লায় মতবিনিময় করছেন।
বর্তমান পৌর মেয়র আনিছের পৌর এলাকায় ওয়ার্ড ভিত্তিক চলছে উঠান বৈঠক। দলীয় কোন্দল জটিলতায় এ পৌরসভায় আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা অনেক বেশি। যে কারণে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দুই মেয়াদে দীর্ঘ ১০ বছর পৌর মেয়রের দায়িত্ব পালন কালে পৌর সভার সামগ্রীক উন্নয়নে সন্তোষজনক ভূমিকা রাখায় পৌরবাসীর কাছে তার আস্থা অর্জিত হয়েছে।
গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়ে ছিলেন। এক পর্যায়ে জনগণ তার বাড়ি ঘেরাও করলে জনগণের চাপে তুপের মুখে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ২য় মেয়াদে জয়লাভ করে মেয়র হয়েছিলেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আনিছুজ্জামান আনিছ।
উপজেলা আওয়ামীলীগের অভিভাবক পর্যায়ের এই নেতা এবারও দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে লবিং চালাচ্ছেন। ত্রিশাল পৌরসভা এখনো গ্রামীণ জনপদ। বর্তমান মেয়র উন্নয়ন সহযোগী জাইকার অর্থায়নে বেশ উন্নয়ন কর্মকা- চালিয়েছেন। আরো কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হলে ত্রিশাল পৌরসভা পূর্ণাঙ্গ শহরে পরিণত হবে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।