ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ‘রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়’-এর সম্পত্তি রক্ষায় ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে উপজেলা সদরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পক্ষে মো. আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় ওই দাবিতে আন্দোলনরত অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ১৯২৭ সালে রাজাপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি সুদীর্ঘ প্রায় ৯৪ বছর ধরে ঐতিহ্য ও গৌরবের সঙ্গে শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। বিদ্যালয়টি প্রায় নয় একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিভিন্ন সময় অবৈধ লিজ ও বেদখলের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের জায়গা সংকুচিত হয়ে শিক্ষার পরিবেশ ও সৌন্দর্য ব্যাহত হচ্ছে। তাই বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ও সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা ও জমি রক্ষার দাবিতে ইতোমধ্যে বর্তমান, প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের জনতা গত ১৫ জুন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। বিদ্যালয়ের বিদ্যমান সংকট সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিম্নোক্ত দাবি পেশ করেন।
দাবিগুলো হলো, বিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের পেছনের উত্তর পাশের খাল পর্যন্ত সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে একাডেমিক কার্যের উদ্দেশে সংরক্ষণ করতে হবে। মাঠের পশ্চিম পাশের বোডিং পুকুর সংলগ্ন ভোকেশনাল ক্যাম্পাস থেকে ক্রীড়া পরিষদের ভবন নির্মাণের অনুমতি বাতিল করে নির্মাণ সামগ্রী অনতিবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। ভোকেশনাল ক্যাম্পাসের পূর্বের একাডেমিক ভবন ভাড়া বাতিল করে কার্যক্রম পুনরায় চালুসহ তৎসংলগ্ন জমি সুরক্ষায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে।
বিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠের সংকোচন রোধ ও খেলার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বধ্যভূমি সংলগ্ন বিদ্যালয়ের জমিতে বিদ্যমান লিজ ও অবৈধ হস্তান্তর করা স্থাপনা উচ্ছেদ করে সীমানা নির্ধারণ ও বিদ্যালয়ের নাম সংবলিত সাইনবোর্ড স্থাপন করতে হবে। আফসার আলী আকন শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তনের ভাড়া বাতিল করে পুনরায় এটি চালু করতে হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের জন্য বরাদ্দ করা বাসভবনের দক্ষিণ পাশের থানা রোড পর্যন্ত পতিত জমিতে সীমানা নির্ধারণ করে সাইনবোর্ড স্থাপন করতে হবে।
বিগত বছর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দেওয়া সব লিজ বাতিল করে ওই সম্পত্তি বিদ্যালয়ের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহার করতে হবে। বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পরিচালনা পর্ষদ গঠনসহ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য আবশ্যক প্যারেডগ্রাউন্ড নিশ্চিত ও দীর্ঘদিনের আলোচিত গ্রন্থাগার স্থাপন করতে হবে। ক্যাম্পাসের সম্মূখভাগ একাডেমিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য বিনষ্ট করে এমন কোনো উদ্যোগ, যেমন- স্টল নির্মাণ বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ না করার স্থায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
দাবিগুলো নিষ্পত্তি করার জন্য বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে মানববন্ধনে বেঁধে দেওয়া আগামী ১৫ জুলাই এরমধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা বাস্তবায়ন না করলে পরবর্তীতে বৃহত্তর প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণের কথাও বলেন তিনি।