বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন রেখেছেন, রিজেন্ট হাসপাতাল ও জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার (জেকেজি) গ্রুপের কর্ণধারদের নৈপথ্য গডফাদাররা কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। আজ সোমবার দুপুরে করোনা প্রতিরোধে লক্ষণভিত্তিক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে রিজভী এ প্রশ্ন তোলেন।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ডে চলছে আওয়ামী লীগ। সে সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে তাদের মধ্যে মানবতার কোনো কাজ নেই। তাদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর কোনো কাজ নেই। জনগণের পকেট থেকে টাকা দিয়ে যে ত্রাণ কেনা হয়েছে, সে ত্রাণ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসা থেকে, না হলে গ্যারেজ থেকে, না হলে পুকুর থেকে, না হলে মাটির তলা থেকে পাওয়া গেছে। এভাবে তারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে আপনারা দেখছেন মাস্কের দুর্নীতি কে করেছে? মন্ত্রীর ছেলে। করোনার জন্য জীবন বাঁচানোর মেশিন ভেন্টিলেটর। সে ভেন্টিলেটর দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কে? ক্ষমতাসীন দলের লোক অথবা মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন। যখন পত্রপত্রিকা, গণমাধ্যম চারিদিকে ছি-ছি পড়ে গেছে। আওয়ামী লীগের এমন কোনো নেতা নেই, যার সঙ্গে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিকের সম্পর্ক নেই। ছবি তুলেছেন, সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুমোদন দিয়েছে তাদের করোনা টেস্ট করার জন্য। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি (মহাপরিচালক) যখন অনুমোদন দেন, সেটা তো সরকারেরই অনুমোদন।’
রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মো. সাহেদের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘উনি সরকারের পক্ষে টক শো করেছে। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপকমিটির সদস্য তিনি। তার পরে বললেন কী? সে নাকি হওয়া ভবনের লোক। যখন ফাঁস হয়ে যায়, যখন মুখ দেখানোর কিছু থাকে না, তখন বিএনপি অথবা হাওয়া ভবনের বলে চাপিয়ে দেয় তারা। ওরা দুর্নীতি-লুটপাট সব করে। যখন ধরা পড়ে যায়, তখন বলে হাওয়া ভবনের লোক। তাদের বলি, এত দিন লালন করেছেন, পুষেছেন, সমৃদ্ধি দিয়েছেন, সাধারণ মানুষের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা অর্জন করেছেন। যাদের (করোনা আক্রান্ত রোগী) পজিটিভ, তাদের নেগেটিভ সনদ দিয়েছেন। আর যাদের নেগেটিভ, তাদের পজিটিভ সনদ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছেন।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের দমননীতির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আপনি একটি মাসুম বাচ্চা মেয়ে মাহমুদা পলি, তাকে রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে এসেছেন। কেন? কারণ, সে ফেসবুকে লিখেছে সরকারের বিরুদ্ধে। এখনো সে কারাগারে। ছাত্রদলের সাবেক নেতা টিটো হায়দারকে চার-পাঁচ দিন আগে তুলে নিয়ে গেছেন। সবাই দেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি লোকেরা তাকে ধরে নিয়ে গেছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, এই দুর্বৃত্তপনা দিয়ে, এই অমানবিক মনুষ্যত্বহীন মানসিকতার শাসন দিয়ে আপনাদের একের পর এক কালো আচরণ বন্ধ করে রাখতে পারবেন না। কোনো না কোনো ফাঁক দিয়ে বের হবেই।’