বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় বাংলাদেশে এখন করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিল চলছে। সরকারের চরম অবহেলা ও দায়িত্বহীন আচরণে বাংলাদেশে কভিড-১৯ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি হিসেবে দেশে মৃত্যু হাজার ছাড়িয়েছে, আক্রান্ত প্রায় লাখের কাছে। বেসরকারি বা অন্যান্য সূত্রে আক্রান্ত ও মৃত্যর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। শনিবার (১৩ জুন) উত্তরার বাসায় আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি ফের কঠোর লকাডাউন চেয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে সাতদফা সুপারিশ করেন।
বিএনপির সুপারিশ
১. প্রয়োজনে সারা দেশে/ এলাকা ভিত্তিক কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের পর্যাপ্ত মানসম্মত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
৩. প্রত্যেক জেলায় করোনা শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাসেবা দ্রুত সম্প্রসারিত করতে হবে।
৪. অভাবগ্রস্ত পরিবারে রেশন কার্ডের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি গার্মেন্টস কর্মী ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদের আর্থিক সুবিধা ও সুচিকিৎসা প্রদান এবং খাদ্য সহায়তা দিতে হবে।
৬. সরকারি ত্রাণ ও অর্থ বিতরণে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ভালো না। করোনা দুর্যোগেও সরকার দলীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও আওয়ামী লীগ নেতাদের লুটের চিত্র ফুটে উঠেছে। তাই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিলে সঠিকভাবে পালন হবে বলে আমরা মনে করি। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও এতে উপকৃত হবে।
৭. আক্রান্ত ও মৃতের সঠিক সংখ্যা উপস্থাপন করতে হবে। তথ্য লুকিয়ে মেকি সফলতা দেখানোর প্রবণতা জনগণের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সুপারিশমালা তুলে ধরার আগে তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে কেউ যদি মুখ খোলে তাহলে মামলা দেওয়া হচ্ছে। রাখা হচ্ছে কারাগারে। শুধুমাত্র করোনা নিয়ে তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে এ পর্যন্ত ৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মানিকগঞ্জে বিএনপি নেতার মেয়েকে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার জন্য গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ত্রাণ আত্মসাৎ, খাদ্যে ভেজাল ও করোনা বিষয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর প্রকাশ করার অভিযোগে সাংবাদিকসহ ৪৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।