“আমি একজন প্রতিবন্ধী, আমি আপনাদের মত সুস্থ্য না। এমন কিছুতেই ঝড়াবেন না যাতে আমার সংসার নষ্ট হয়ে যায়। আমার সংসারটা ভাবেন না, আল্লাহ সইবে না।” শনিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে এমন বিলাপ করে কান্নায় ভেঙ্গে পরলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী রওশন আক্তার। সম্প্রতি ভালবাসা দিবস উপলক্ষে ভালবাসার দৃষ্টান্ত স্বরূপ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গুজিয়াম গ্রামের রওশন-সোহেল দম্পতির ভালবাসার গল্প। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে “প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভাইরাল হওয়া সেই সোহেল” শিরোনামে প্রকাশিত হয় সংবাদ। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে।
জানা গেছে, বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ময়মনসিংহের সোহেল মিয়া ও প্রতিবন্ধী রওশন দম্পতি গনমাধ্যমে কল্যাণে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। এর ফলে দীর্ঘ ১৫ বছর পর সোহেল মিয়ার সন্ধ্যান পায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামের লোকজন ও তার ১ম পক্ষের পরিবার।
পরিবার ও স্বজনেরা জানায়, তার নাম সোহেল মিয়া বলা হলেও আসল নাম মোখলেসুর রহমান বকুল। একই ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের শুরাতন বেগমের সাথে তার বিয়ে হয় ১৯৯২ সালে। এরপর ২০০৪-২০০৫ সালের দিকে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে আর ফিরেনি। ওই সময় তিনি খোঁজা খবর করেও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি।
সোহেল মিয়ার ১ম স্ত্রীর বড় ছেলে সিহাব বলেন, যে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে, এটাই দেশবাসীকে জানাতে চাই। তিনি আমার বাবা হলেও বলতে হচ্ছে তিনি মিথ্যা বলছে, সে একটা ভন্ড আমাদের রেখে সমস্ত কিছু বিক্রি করে চলে গেছে। আমার মায়ের নামে যে সম্পতি ছিল তাও বিক্রি করে দিয়ে আমাদের নিঃস্ব করে গেছে। আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। সেখানে কোন ভালো উদ্দেশ্য নিয়া যায়নি আসলে সে লুকিয়ে থাকতেই সেখানে গিয়েছে।
এ বিষয়ে সোহেলের স্ত্রী রওশন আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভালবেসে ১৫ বছর ধরে সাথে আছে। তার নাম পরিচয় অমার কাছে কোন বিষয় না। আমারমত একজন প্রতিবন্ধী মেয়েকে সে মেনে নিছে এটাই তো অনেক বড়। আমার কাছে এত বছর ধরে পরে আছে আমি তাকে কোন ধন-সম্পদ দেইনি। ভালবাসা আমাদেরকে অটুট করে রেখেছে। সুস্থ্য স্বাভাবিক কোন ছেলে আমাকে নিয়ে এত বছর থাকতো না।
সেহেল মিয়া জানান, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করিনি। নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছি। আমার ১ম পক্ষের স্ত্রী সন্তান আছে কিন্তু তারা আমাকে চায় না। আমি আমার গ্রাম থেকে পালিয়ে আসিনি। আমার এলাকায় ডাক নাম বকুল। প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেটে মোখলেছুর রহমান এবং আমার ভোটার আইডি কার্ডে সোহেল মিয়া। আমার ১ম পক্ষের স্ত্রী সন্তানরা স্থানীয় মানুষদের প্ররোচনায় হয়রানি করার উদ্দ্যেশে এমন কাজ করতেছে। রওশন আমার সম্পর্কে সকল কিছুই জানে।